দিবাকর জানা
বিডিও সঙ্গে মতোবিরোধ এবং তাঁর অপসারণ চেয়ে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই সরব হয়েছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। সেই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল আরও একবার। এবার বিডিও’র সঙ্গে বৈঠক চলাকালীন সেখান থেকে উঠে বেরিয়ে গেলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি।
শহিদ মাতঙ্গিনীর বিডিও সুমন মণ্ডল মঙ্গলবার একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে বাংলা আবাস যোজনা, জাতীয় সামাজিক সহায়তা প্রকল্প-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। পঞ্চায়েত সমিতি অফিসের সভাকক্ষে হওয়া ওই বৈঠকে সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষ, ব্লকের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের ডাকা হয়েছিল। ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, শারদীয়ার শুভেচ্ছা বিনিয়ম করে বৈঠক শুরুর কিছুক্ষণ পরেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা বিডিও’র বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে, তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করেই ওই বৈঠকের বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
অভিযোগ, এর পরেই দিবাকর উত্তেজিত হয়ে টেবিল চাপড়াতে শুরু করেন। ওই সময় পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ রাজেশ হাজরা বিডিও’র কাছ থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ। আচমকা এমন ঘটনায় হুলস্থূল পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে ক্ষুদ্ধ দিবাকর ওই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান বলে দাবি। তাঁর সঙ্গেই চলে যান রাজেশ এবং কৃষি সেচ কর্মাধ্যক্ষ গৌরহরি মাজি। ওই ঘটনার পরে সভা কক্ষে উপস্থিত পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শোভা সাহু-সহ অন্য কর্মাধ্যক্ষ ও পঞ্চায়েত প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেন বিডিও।
এ ভাবে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসার কারণ হিসাবে দিবাকরের বক্তব্য, ‘‘বিডিও পঞ্চায়েত সমিতির সমিতির এগজিকিউটিভ অফিসার হিসেবে বৈঠক ডেকেছিলেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের বৈঠক ডাকতে হলে সমিতির সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করতে হয়। বিডিও তা করেননি। আর ওই দুই কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে বিডিও দুর্ব্যবহার করায় আমরা বৈঠক থেকে চলে এসেছি।’’
উল্লেখ্য, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের ঠিকাদার নিযোগ প্রক্রিয়াকে ঘিরে দিবাকরের সঙ্গে বিডিও’র বিরোধের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল কিছুদিন আগেই। অভিযোগ, ওই ঘটনার জেরে বিডিও’কে অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়ার হুমকিও দেন। বিডিও নিজের নিরাপত্তা চেয়ে সে সময় জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। যার জেরে প্রশাসনের তরফে ব্লক অফিসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। দুর্গাপুজোর আগে ওই ঘটনার রেশ কাটার আগেই ফের বিডিও-সভাপতি দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল।
এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বিডিও সুমন মণ্ডল বলেন, ‘‘বৈঠকের বিষয়ে সভাপতি-সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে আগে কেন বলা হয়নি, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলে সভাপতি উত্তেজিত হয়ে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। দুই কর্মাধ্যক্ষও সভা ছাড়েন। কর্মাধ্যক্ষদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ সঠিক নয়।’’