বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃণমূলের প্রস্তুতি বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।
দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন সবাইকে নিয়ে কাজ করার। সেই মতো বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম শহরের দেবেন্দ্রমোহন হলে জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে বৈঠক ডেকেছিলেন শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রশান্ত রায়। সেখানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দেবনাথ হাঁসদাও বার্তা দিলেন, কোন্দল ভুলে দলীয় প্রার্থীর জন্য পুরভোটে ঝাঁপাতে হবে। অথচ সেই বৈঠকেই বেআব্রু হল তৃণমূলের কোন্দল। গন্ডগোল গড়াল হাতাহাতিতে।
দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠকে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কর্মী সমরেশ বেরা জানান, শ্রীরামকৃষ্ণ সারদাপীঠ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে স্থানীয় কিছু বাচ্চাদের ভর্তি করানো হচ্ছে না। দলের তরফে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে না। শহর নেতৃত্বকে বারবার জানিয়ে সুরাহা হয়নি। এরপরই দেবনাথ সমরেশকে বেরিয়ে যেতে বলেন। ফের বৈঠক শুরু হলে দশরথ হেমব্রম কথা বলতে গেলে জেলা সভাপতি তাঁকেও চুপ করতে বলেন। তারপরই ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আরও দুই কর্মী চেঁচিয়ে ওঠেন। তাঁরা তেড়েফুঁড়ে মঞ্চের সামনে চলে আসেন। প্রশ্ন তোলেন, সমরেশকে বৈঠক থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হলেও দশরথকে বলা হল না কেন! এ নিয়ে প্রায় কুড়ি মিনিট চলে গন্ডগোল। তখন শহর তৃণমূল সভাপতি প্রশান্ত রায় নিশ্চুপ ছিলেন।
দলের এক নেতা বলছেন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ওই কর্মীরা প্রশান্ত অনুগামী। প্রশান্তের সঙ্গে দেবনাথের ঠান্ডা লড়াই রয়েছে। জেলা কমিটির ডাকা বৈঠকে পরপর চারবার গরহাজির ছিলেন প্রশান্ত। পঞ্চম বৈঠকেও বুড়িছোঁয়া করেন। এ দিন বৈঠকে কি সেই দ্বন্দ্বই বেআব্রু হল, উঠছে প্রশ্ন। দলীয় নেতা-কর্মীদের হস্তক্ষেপে গন্ডগোল মিটলেও জেলা সভাপতি নিজে মাইক নিয়ে দেন, ‘‘এ সব গন্ডগোল করে লাভ নেই। সামনে নির্বাচন। সবাইকে একত্রিত হয়ে লড়তে হবে।’’ তারপর একের পর একর্মসূচি জানান দেবনাথ। এরপর গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ মাহাতোর বক্তব্য শেষে তড়িঘড়ি বৈঠকে দাঁড়ি টানা হয়।
বৈঠকে প্রাক্তন পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব-সহ পাঁচজন কাউন্সিলর গরহাজির ছিলেন। জেলা কমিটির সদস্য অশোক মহাপাত্র বৈঠকে বলেন, ‘‘ভোটের সময় কর্মীদের কথা মনে পড়ে। ভোট শেষ হয়ে গেলে কর্মীদের মনে পড়ে না। এটা যেন না হয়।’’ পরে দেবনাথ বলছেন, ‘‘শুক্রবার থেকে দেওয়াল দখল, পতাকা লাগানো শুরু করতে বলেছি। জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত, তবে ব্যবধান আরও বাড়াতে হবে।’’