চিকিৎসার অবহেলায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বিক্ষোভ দেখালেন মৃতের পরিজনেরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশও। অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে হাসপাতালে বাড়তি পুলিশও মোতায়েন করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ। হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজার কথায়, “ওই অভিযোগ ঠিক নয়। বুধবার রাতে হাসপাতালে একটা সমস্যা হয়েছিল। তবে বড় কোনও গোলমাল হয়নি।’’
বুধবার রাতের তাইজুদ্দিন মল্লিক (৫৪)-কে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। মেদিনীপুর সদর ব্লকের রাজারবাগানের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ়ের বুকে ব্যথা হচ্ছিল। রাতে তিনি মারা যান। পরিজনেদের অভিযোগ, সন্ধ্যায় যখন তাইজুদ্দিনকে হাসপাতালে আনা হয়, তখন কোনও সিনিয়র ডাক্তার ছিলেন না। জুনিয়র ডাক্তাররাই রোগীকে দেখেন। তাইজুদ্দিনের ভাইপো মফিজুল মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘বিনা চিকিৎসাতেই কাকার মৃত্যু হয়েছে। সিনিয়র ডাক্তার ছিলেন না। নার্সও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেনি।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘এক সময় রোগীকে অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে তা দেওয়া হয়নি।’’
মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ নতুন নয়। চিকিৎসকেদের দেখা না মেলা, কথা কথায় রেফার করে দেওয়া, ঠিকমতো রোগীর যত্ন না নেওয়ার অভিযোগ এখানে হামেশাই ওঠে। রোগীর পরিজনেদের তাই প্রশ্ন, ‘‘জেলার সব থেকে বড় এই হাসপাতালে মানুষ আসেন ভাল চিকিৎসা পাওয়ার আশায়। সেখানেই যদি চিকিৎসক-নার্সরা এ ভাবে অবহেলা করেন, হাসপাতালের এই পরিকাঠামো হয়, তাহলে মানুষ যাবেন কোথায়!”
হাসপাতালের এক কর্তার অবশ্য সাফাই, “এসএসকেএমের মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই, এটা ঠিক। কিছু ত্রুটি রয়েছে। এত বড় প্রতিষ্ঠানে কিছু ত্রুটি থাকবে! তবে আমরা ত্রুটিগুলো সংশোধন করার চেষ্টা করছি। ধারে ধাপে সব পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।’’
একই সঙ্গে হাসপাতালের ওই কর্তার যুক্তি, অনেক সময় সঙ্কটজনক অবস্থায় রোগীকে আনা হয়। তখন চেষ্টা করেও কিছু করা যায় না। রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। তবে তাইজুদ্দিনের ক্ষেত্রে কোনও গাফিলতির অভিযোগ মানেননি মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।