বিএসএনএলে নেটে নাকাল, বাড়ছে ক্ষোভ

কয়েক মাস ধরেই দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিএসএনএলের থ্রি-জি পরিষেবা বিপর্যস্ত। এমনকী এই তিন জেলার পরিষেবা যেখান থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়, সেই খড়্গপুর টেলিকম জেলার সদর শহর খড়্গপুরেও থ্রি-জি পরিষেবা ঠিকঠাক মিলছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩০
Share:

আরও বেশি ‘ইন্টারনেট স্পিড’, সঙ্গে নানা ‘অফার’। বেসরকারি মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি গ্রাহক টানতে নানা পদক্ষেপ করছে। মফস্‌সল থেকে গাঁ-গঞ্জেও এখন সস্তায় মিলছে ‘ফোর-জি’ পরিষেবা। কিন্তু এ সবের মাঝে বেশ খানিকটা পিছিয়েই পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিএসএনএলের মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা। ‘ফোর-জি’ দূর, এখনও পর্যন্ত থ্রি-জি পরিষেবাই সঠিকভাবে দিতে পারছে না এই সংস্থা।

Advertisement

কয়েক মাস ধরেই দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিএসএনএলের থ্রি-জি পরিষেবা বিপর্যস্ত। এমনকী এই তিন জেলার পরিষেবা যেখান থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়, সেই খড়্গপুর টেলিকম জেলার সদর শহর খড়্গপুরেও থ্রি-জি পরিষেবা ঠিকঠাক মিলছে না। ঝাড়গ্রাম, ঘাটাল, মেদিনীপুর, হলদিয়া, তমলুকের মতো শহরেও একই অবস্থা। আর গ্রামাঞ্চলে টু-জি নেটওয়ার্কে ১২৮ কেবিপিএস ইন্টারনেট পরিষেবায় সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এই অবস্থায় অনেকেই ‘পোর্ট’ করিয়ে মোবাইল নম্বর না বদলে বেসরকারি সংস্থার পরিষেবা নিচ্ছেন। আর যাঁরা এখনও বিএসএনএলের গ্রাহক, তাঁরা চাইছেন ইন্টারনেট পরিষেবার মানোন্নয়ন করুক বিএসএনএল।

অথচ, এক সময় বিএসএনএলের হাত ধরেই জেলায় মোবাইল পরিষেবার সূচনা হয়েছিল। এখনও দুই জেলার বহু রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রী, সরকারি আধিকারিক, আইআইটির অধ্যাপক-সহ সমাজের নানাস্তরের মানুষের ব্যক্তিগত নম্বরটি বিএসএনএলের। কিন্তু পরিষেবা বিপর্যস্ত হওয়ায় বিরক্ত সকলেই। খড়্গপুর শহরের মালঞ্চ, ঝাপেটাপুর, নিউ সেটলমেন্ট, রেল হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল, গোলবাজার, মথুরাকাটি-সহ বিভিন্ন এলাকায় থ্রি-জি পরিষেবাও অমিল। মালঞ্চর বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক চয়ন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি ২০০৩ সালে সাংসদ কোটায় বিএসএনএল সিম নিয়েছিলাম। এখনও সেই নম্বর রয়েছে। কিন্তু অন্য সংস্থায় পোর্ট করেছি। কারণ, আমাদের এলাকায় টু-জি পরিষেবাও দিতে পারে না বিএসএনএল। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার এমন হাল দেখে খারাপ লাগে।”

Advertisement

সমস্যা ঠিক কোথায়?

বিএসএনএল সূত্রে খবর, খড়্গপুর টেলিকম জেলার আওতায় প্রায় ২লক্ষ মোবাইল গ্রাহক রয়েছেন। উন্নত পরিষেবা দিতে খড়্গপুরের ডি-ট্যাক্স অফিসে দু’টি সিগন্যাল ট্রান্সফার প্রোটোকল (এসএসটি) রয়েছে। এই এসএসটি নিয়ন্ত্রিত মাইক্রোওয়েভ সিস্টেমের টাওয়ার থেকেই পরিষেবা পৌঁছয়। শহরের মধ্যে এলাকাভিত্তিক ছোট-ছোট ‘বেস ট্রান্সসিভার স্টেশন’(বিটিএস) রয়েছে। এগুলি পরস্পর তরঙ্গের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে। সেখান থেকেই গ্রাহকদের মোবাইলে কল ও ইন্টারনেট সংযুক্ত হয়। টু-জি পরিষেবায় বিটিএস প্রায় আড়াই কিলোমিটার ব্যাসার্ধে পরিষেবা দিতে পারে। কিন্তু থ্রি-জি পরিষেবার জন্য ৫০০ মিটার অন্তর বিটিএস প্রয়োজন। শহরের যে সব এলাকায় ৫০০ মিটারের মধ্যে থ্রি-জি বিটিএস নেই সেখানে থ্রি-জি পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না।

সমস্যার কথা স্বীকার করে বিএসএনএলের সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার বিপিন কাশ্যপ বলেন, “খড়্গপুর শহরে রেল এলাকায় বিটিএস টাওয়ার বসানোয় সমস্যা রয়েছে। তাছাড়া থ্রি-জির জন্য ৫০০ মিটার ব্যাসার্ধের দূরত্বে যত বিটিএস প্রয়োজন, তা আমরা দিতে পারছি না।” বিএসএনএলের জেনারেল ম্যানেজার মীরা মার্দিরও বক্তব্য, “বিটিএস কম থাকায় থ্রি-জি পরিষেবা সর্বত্র দেওয়া যাচ্ছে না। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরে কিছু বিটিএস সরবরাহ করা হবে। সেগুলি বসানো হলে আগামী বছর থেকে ভাল পরিষেবা পাওয়া যাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement