শবর মহিলার অভিযোগ শুনছেন জেলাশাসক। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় একমাস রেশন সামগ্রী পাচ্ছেন না শবর সম্প্রদায়ের এক মহিলা। এ দফার দুয়ারে সরকারের প্রথম দিনে শিবিরে গিয়ে এমনই অভিযোগ শুনলেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক। আবার কারও কাছ থেকে অভিযোগ পেলেন যে, দু’বার আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র। এরপর কোথাও মিলল চটজলদি সমাধান, কোথাও দ্রুত পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি!
শুক্রবার দুপুরে আচমকাই জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল পৌঁছেছিলেন ঝাড়গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কদমকানন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুয়ারে সরকার শিবিরে। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী। সেখানেই এমনই অভিযোগের প্রসঙ্গ সামনে আসে। জেলাশাসক শিবিরে গিয়েই সেখানকার কর্মীদের কাছে জানতে চান জয়জোহার প্রকল্প, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতার জন্য কী কী তথ্য আনতে বলা হয়েছে? পুরকর্মীরা জানান— আধার কার্ড ভোটার কার্ড, সিঙ্গল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের জেরক্স, আয়ের শংসাপত্র আনতে বলা হচ্ছে। এরপর জেলাশাসক হেসে বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড কি লাগবে?’’ প্রশ্ন শুনে পাশ থেকে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এ বার লাগছে না।’’ জেলাশাসকের উত্তর, ‘‘জানি লাগবে না। তবুও আপনারা মানুষজনকে বলছেন কি না, তা খোঁজ নিলাম।’’ ক্ষণিকের সরস কথোপকথনের পর শিবিরের কর্মীদের উদ্দেশে জেলাশাসকের কড়া বার্তা— কেউ যদি ফর্মপূরণ করতে পারেন, তাঁদের ফর্মপূরণ করে দিতে হবে। শিবির থেকে একজনও যাতে ফিরে না যান, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
জেলাশাসককে কাছে পেয়ে আরতি শবর নামে এক বৃদ্ধা জানান, তিনি একমাস ধরে রেশন সামগ্রী পাচ্ছেন না। আরতির কথায়, ‘‘বৌমা লক্ষ্মী শবরের কার্ডে এক মাস ধরে রেশন পাচ্ছি না। কেন বন্ধ রয়েছে, তা জানতে দুয়ারে সরকারে শিবিরে এসেছিলাম।’’ পরে জেলাশাসক শিবিরে খাদ্যসাথীর কাউন্টারে যেতেই সেখানকার কর্মী জানান, ওই মহিলার রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের লিঙ্ক নেই। তাই এমন বিভ্রাট! প্রসঙ্গের সূত্র ধরে সিপিআইয়ের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি ছবি দাস মল্লিক জেলাশাসককে জানান, আধার কার্ডের সমস্যার জন্য এ রকম অনেকেই রেশন পাচ্ছেন না। ফলে বহু মানুষ, বিশেষ করে লোধা-শবর মানুষজন বেশি বঞ্চিত হচ্ছেন।
জাতিগত শংসাপত্রের শিবিরে বর্ণালী নামাতা নামে এক মহিলা আবেদনপত্র জমা করছিলেন। বর্ণালী জেলাশাসককে জানান, তাঁর বড় মেয়ে পায়েল ও ছোট মেয়ে ইপ্সিতার জন্য একসঙ্গেই শংসাপত্রের জন্য আবেদন করেছিলাম তিনি।