এই দলীয় কার্যালয় ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পে তৈরি এক উপভোক্তার নামে বরাদ্দ পাকাবাড়ি দখল করে তৃণমূলের কার্যালয় চালানোর অভিযোগ উঠেছিল বর্ধমানের জামালপুরে। সেই ঘটনায় রাজনৈতিক বিতর্ক অব্যাহত। এবার সরকারি অর্থ বরাদ্দে জেলা পরিষদের তৈরি দোকানঘরের ‘স্টলে’ তৃণমূলের কার্যালয় উদ্বোধন হল পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুক শহরে।
রবিবার তৃণমূলের ২৫ তম প্রতিষ্ঠা দিবসে তমলুক শহর তৃণমূলের ওই নতুন দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়। তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়ে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশেই জেলাপরিষদ পরিচালিত বাণিজ্যিক ভবনের দোতলায় দোকানঘরের তিনটি স্টল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। তমলুকের বিধায়ক তথা তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র ওই কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন। প্রশ্ন উঠেছে, বেকার যুবক-যুবতীদের ব্যবসার জন্যই জেলাপরিষদ ওই বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করেছিল। দোতলা ওই ভবনে দোকান চালুর জন্য ‘স্টল’ বণ্টন করা হয়েছিল সরকারিভাবে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে। ওই সব স্টলের ‘লিজ’ বাবদ নির্দিষ্ট অর্থ দিতে হয় স্টল প্রাপকদের। কয়েক বছর আগে চালু হওয়া ওই বাণিজ্যিক ভবনে প্রায় সমস্ত স্টলে বিভিন্ন দোকান চালু হয়েছে। কিন্তু ওই সব দোকানের মাঝে পাশাপাশি থাকা তিনটি স্টল নিয়েই তমলুক শহর তৃণমূলের কার্যালয় চালু করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এভাবে জেলাপরিষদের তৈরি বাণিজ্যিক ভবনের স্টল নিয়ে দোকানপাটের বদলে দলীয় কার্যালয় খোলা যায় কিনা প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, জেলা পরিষদের তৈরি বাণিজ্যিক ভবনে যে তিনটি স্টল নিয়ে দলীয় কার্যালয় চালু হয়েছে তার মধ্যে দুটি স্টল লিজ নিয়েছিলেন তমলুক শহর তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া। পাশে থাকা আরও একটি স্টল নিয়ে মোট তিনটি স্টলে দলীয় কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু এভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নির্মিত সরকারি ভবনে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় খোলা যায় কি না তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্নের মুখে জেলাপরিষদের ভূমিকাও।
বেকার যুবক-যুবতীরা যাতে ব্যবসা করে স্বনির্ভর হতে পারেন সেজন্য তৈরি সরকারি ভবনে এভাবে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় খোলা যায়? জেলাপরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মৃণালকান্তি দাস বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের ওই বাণিজ্যিক ভবনের দোকানঘরগুলি সরকারি নিয়ম মেনে ব্যবসা করার জন্যই ‘লিজ’ দেওয়া হয়েছে। এজন্য স্টল প্রাপক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ‘লিজ’ বাবদ অর্থ আদায় করা হয়। ওই স্টলে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় খোলা যাবে না। তবে ওই স্টলে দলীয় কার্যালয় খোলার বিষয়টি এখনও আমাদের নজরে আসেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’