কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাতভর অবস্থানে বসল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সবংয়ের চাউলকুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে ওই অবস্থান চলে। পরে বিডিও এসে বৈঠকের পরে তদন্তের আশ্বাস দিলে দুপুরে অবস্থান তুলে নেয় তৃণমূল।
শাসক দলের অভিযোগ, দুর্নীতি নিয়ে স্মারকলিপি দিলেও পঞ্চায়েত প্রধান সদুত্তর দিতে পারছেন না। যদিও কংগ্রেসের মতে, প্রধান-সহ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের ভাঙিয়ে দলে টানার জন্য চাপ সৃষ্টি করতেই মিথ্যা অভিযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল।
২০১৩-র নির্বাচনে এই পঞ্চায়েতে একটি আসনেও জেতেনি তৃণমূল। ১২টি আসনের মধ্যে ৮টি কংগ্রেস ও ৪টি বামেরা দখল করে। এ বার বিধানসভা নির্বাচনেও সবং কেন্দ্রে জিতেছে কংগ্রেস। আর তারপর থেকেই দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ।
সম্প্রতি কংগ্রেস ছেড়ে এক পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এখন বাকি ৭জন পঞ্চায়েত সদস্যকে তৃণমূল দলে টানতে চাইছে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, এই পঞ্চায়েতে টেন্ডার ছাড়া নানা কাজ হচ্ছে। সম্প্রতি একটি টিউবওয়েলের কাজ টেন্ডার ছাড়াই হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া একই রাস্তার কাজ দু’বার দেখানো, অ্যাম্বুল্যান্সের আয় লুকিয়ে খরচ দেখানো, বনমহোৎসবের নামে ৪৫ হাজার টাকা খরচ-সহ নানা অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এ সব নিয়েই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। প্রধানকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের সবং ব্লক সভাপতি প্রভাত মাইতি, অঞ্চল সভাপতি অশোক চিনি। কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধান সদুত্তর দিতে পারেননি বলে দাবি তৃণমূলের। এরপর ঘটনার বিহিত চেয়ে বিডিও-কে ডাকেন তৃণমূল নেতারা। বিডিও না আসায় রাতভর অবস্থান চলে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রভাতবাবুর বক্তব্য, “এই পঞ্চায়েতে দুর্নীতির প্রমাণ আমরা পেয়েছি। এ দিন বিডিও এসে তদন্তের আশ্বাস দেওয়ায় অবস্থান তুলে নিয়েছি। এক মাস দেখে দরকারে ফের আন্দোলন করব।’’
কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সিদ্দিক মীর অবশ্য বলেন, “আমাদের সব কাজের হিসাব রয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে কাজ হওয়ায় টেন্ডার করা হয়নি এটা ঠিক। তবে এ নিয়ে অযথা আন্দোলন করছে তৃণমূল। আসলে আমাদের সাত পঞ্চায়েত সদস্যকে তৃণমূলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এ ভাবে চাপ বাড়াতে চাইছে ওরা।’’