প্রতীকী ছবি।
গড়বেতায় তৃণমূল নেতাদের পরিবারে একাধিক জবকার্ড রয়েছে— একযোগে অভিযোগ গেরুয়া আর লাল শিবিরের। সেই অভিযোগে শীঘ্রই পৃথক ভাবে পথে নামতে চলেছে তারা। তৃণমূলের একাংশ কর্মীরাও মানছেন, নেতাদের পরিবারের অনেকেই জবকার্ডধারী আছেন। একশো দিনের কাজ না করেই তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বেমালুম টাকা ঢুকেছে। এর সঠিক তদন্ত দাবি করছেন ওইসব কর্মীরা। যদিও এ নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি প্রশাসনের কাছে।
বিরোধীরা উদাহরণ হিসেবে সামনে আনছেন গড়বেতা ১ ব্লকের সন্ধিপুর পঞ্চায়েতকে। বিজেপির জেলা সম্পাদক গৌতম কৌড়ি তথ্য তুলে ধরে অভিযোগ করেন, ‘‘সন্ধিপুরে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য তাঁর স্ত্রী, বাবা, মা-র নামে জবকার্ড করিয়ে রেখেছেন। এই পঞ্চায়েতে আরও কয়েকজন তৃণমূল নেতা একইভাবে পরিবারের সদস্যদের নামে জবকার্ড করিয়ে একশো দিনের কাজের অর্থ তুলেছেন। এর তদন্তের দাবিতে আমরা আন্দোলনে নামব।’’ একই অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবি জানিয়েছে সিপিএম। তাদের জেলা কমিটির সদস্য গড়বেতার দিবাকর ভুঁইয়ার অভিযোগ, ‘‘সন্ধিপুর-সহ গড়বেতার অনেক পঞ্চায়েতেই খোঁজ নিলে দেখা যাবে তৃণমূলের নেতাদের পরিবারে একাধিক জবকার্ড রয়েছে। তদন্ত হলে অনেক নেতাই জড়িয়ে যাবেন। আমরা গড়বেতায় জবকার্ড দুর্নীতিতে পথে নামছি।’’
বিজেপি ও সিপিএমের তোলা অভিযোগ যে অমূলক নয়, তা তৃণমূলের একাংশ কর্মীর কথাতেই পরিষ্কার। এই কর্মীরা বলছেন, নেতাদের পরিবারে একাধিক জবকার্ড রয়েছে। একশো দিনের কাজ না করেই তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে। যেমন, সন্ধিপুর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের এক নেতা তাঁর নিজের নামে তো বটেই, তাঁর স্ত্রী, বাবা, মায়ের নামেও জবকার্ড করিয়েছেন বলে অভিযোগ। ওই নেতা অভিযোগ কার্যত তা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘জবকার্ড তো বহুদিনের করা। অভিযোগ যে কেউ করতে পারে অসুবিধা নেই। সন্ধিপুরে আমাদের সংসদে ২০১১ সালের পর থেকে কোনও সমস্যা নেই।’’ এই পঞ্চায়েতে আর এক তৃণমূল নেতার পরিবারে ৪ জনের নামে জবকার্ড করা আছে বলে অভিযোগ। এ রকম উদাহরণ একাধিক রয়েছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করছে। তৃণমূল পরিচালিত সন্ধিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সরফুদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘জবকার্ডের বিষয়ে যদি কোনও অভিযোগ ওঠে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘জবকার্ডের বিষয়টি আমার ঠিক জানা নেই। অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখব।’’ গড়বেতা ১ বিডিও শেখ ওয়াসিম রেজা বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজ বা জবকার্ড নিয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি।’’