দুর্গত এলাকায় রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। ঘাটালের ইড়পালা পঞ্চায়েত এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।
বন্যা প্লাবিত ঘাটালে প্রশাসনের তরফে ত্রাণ বিলি চললেও, প্রায়ই শোনা যাচ্ছিল ত্রাণ নিয়ে ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘাটাল ঘুরে যাওয়ার পর এ বার ত্রাণ ও খাবার বিলি নিয়ে আরও তৎপর হল প্রশাসন। এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত ত্রাণ, ত্রিপল দেওয়ার পাশাপাশি রান্না করা খাবার বিলির ব্যাপারেও জোর দেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকে ঘাটাল ব্লকের প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’টি করে ‘কমিউনিটি কিচেন’ শুরু হয়েছে বলে খবর। নতুন করে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সংস্থাও ঘাটালে এসে খাবার বিলি করছে।
ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, “পঞ্চায়েতগুলিতে রান্না হচ্ছিল। বুধবার থেকে আরও বেশি পরিমাণ খাবার তৈরি করে বিলি করা হচ্ছে। তা ছাড়া একাধিক সংস্থা, সংগঠন ঘাটালে এসে কাজ শুরু করেছে। সব রকম ভাবে তাদের সাহায্য করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত ত্রাণের ত্রিপলও দেওয়া হচ্ছে।” ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। বুধবার ঘাটালের বহু নিচু এলাকা থেকে জল সরে গিয়েছে। ঘাটাল শহর-সহ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও অবশ্য জলমগ্ন। ঘাটালে পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট চলছে। এখনও ঘাটালের বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন। তবে গ্রামগুলি থেকে জল কমার পরই, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করে দিচ্ছে বিদ্যুৎ দফতর।
এ দিকে আবার প্রশাসনের ত্রাণ বিলির ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে কয়েকদিন ধরেই ঘাটাল ব্লকের আজবনগর, দেওয়ানচক, মনসুকা, ইড়পালা, বীরসিংহ, মোহনপুর, সুলতানপুর-সহ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। মঙ্গলবার ঘাটালে বন্যা পরিদর্শনে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক আধিকরিকদের নির্দেশ দেন, ‘‘মানুষ যখন বিপদে পড়ে, তখন কোনও ভেদাভেদ নয়। সবাইকে যেন সব রকম ভাবে আমরা সাহায্য করতে পারি।’’ একাধিক সংগঠনকেও ঘাটালে এসে কাজ করার অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসন সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই ঘাটাল ব্লকের দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রান্না করা খাবার বিলি চলছিল। বুধবার থেকে প্রশাসনের উদ্যোগে প্রত্যেক পঞ্চায়েতে দু’টি করে কমিউনিটি কিচেন শুরু হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন শতাধিক দুর্গত মানুষকে খাবার দেওয়া হবে। তা ছাড়া এ দিন নতুন করে কলকাতার একাধিক সংস্থা ঘাটালের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে খাবার বিলি করছে। ঘাটালে এসে কাজ করতে চেয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আরও অনেক সংস্থা যোগাযোগ শুরু করেছে বলেও খবর।