বন্ধ শহরের একটি এটিএম।
এটিএমে টাকা নেই। ব্যাঙ্কে গেলেও যে খুচরো মিলবে তারও নিশ্চয়তা নেই। মোট বাতিলের ১২ দিন পরও তাই খুচরোর সমস্যায় জেরবার ঘাটালের বাসিন্দারা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, নতুন ২০০০ টাকা নোট হাতে এলেও দৈনন্দিন কেনাকাটা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। নতুন ৫০০ টাকা হাতে না আসা পর্যন্ত এমন সমস্যা থাকবে বলেই ধারণা এলাকা বাসিন্দাদের। তবে স্টেট ব্যাঙ্কের ঘাটাল শাখার চিফ ম্যানেজার সুব্রত বিশ্বাসের আশ্বাস, “আশা করছি, চলতি সপ্তাহের প্রথমেই এটিএম থেকে ৫০০ টাকার নোট মিলবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েকটা দিন লাগবে।’’
৫০০-১০০০ টাকা অচল ঘোষণার দিন দু’য়েকের মধ্যেই এটিএম থেকে টাকা মিলবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ঘোষণার পর কেটে গিয়েছে আরও ১২টা দিন। পরিস্থিতির যে খুব একটা উন্নতি হয়েছে, সেটা বলা যায় না। এখনও ঘাটাল মহকুমায় এটিএমে গেলে চোখে পড়ছে ‘নো ক্যাশ’ লেখা সাইন বোর্ড। আবার কোনও কোনও এটিএমের ঝাঁপই বন্ধ। আর ব্যাঙ্ক থেকে যে নতুন ২০০০ টাকা দিচ্ছে তার খুচরো করতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। খুচরোর দিতে পারছে না বলে ওই টাকা নিতে চাইছেন না বিক্রেতারাও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল শহরেই সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাঙ্কের দশটির মতো এটিএম রয়েছে। গোটা মহকুমায় এটিএমের সংখ্যা ৪০টি। শহরের প্রতিটি এটিএমই চালু। কিন্তু এতদিন কেটে গেলেও গ্রাম বা ছোট শহরের এটিএমগুলো তো দূর, খোদ শহরের এটিএমে পর্যাপ্ত নোট মিলছে না বলে অভিযোগ স্থানীদের। স্টেট ব্যাঙ্কের দু’টি এটিএমে (ঘাটাল শহরে) দু’দিন টাকা ভরেছিল ছিলেন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু টাকার পরিমাণ এতই কম ছিল যে আধঘন্টার মধ্যে ভল্ট ফাঁকা হয়ে গিয়েছেল বলে অভিযোগ। আর হাতে টাকা না থাকায় সমস্যায় সাধারণ মানুষ।
সমস্যা এতটাই যে, মুদি দোকান থেকে সব্জি বাজারে যাওয়ার আগে অচল ৫০০ বা ১০০০ টাকা নিয়েই বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দা। ওই বাতিল টাকা দিয়ে হাতে আসছিল ৩০০ এবং ৭০০ টাকা। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে এখন ওই বাতিল টাকার কদরও আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। এমনকী বিক্রেতারা ওই বাতিল টাকা আর নিতেও চাইছেন না। ঘাটাল শহরের বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা প্রাক্তন রেল কর্মী সমরেশ সামন্ত বলেন, “ব্যাঙ্কে দু’দিন ধরে গিয়ে মোট সাত হাজার টাকা পেয়েছি। তার মধ্যে নতুন ২০০০ টাকাই তিনটে। হাজার টাকার খুচরো দু’দিনের শেষ। ওই দু’হাজার টাকার নোট দিয়ে কী করব বলুন তো!’’ দিন যত গড়াচ্ছে খুচরোর অভাবে ফাঁকা হতে শুরু করেছে বাজারও।
সাধারণ বাসিন্দাদের প্রশ্ন, এটিএমগুলো থেকে ৫০০ টাকার মোট মিলবে কবে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা প্রবন্ধকের কথায়, ‘‘এখনও ব্যাঙ্কে ৫০০ টাকাট নোট আসেনি। ব্যাঙ্ক থেকে কেউ তিন হাজার টাকা তুললে আমরা খুচরো এক হাজার টাকা দিচ্ছি। তবে কলকাতার বিভিন্ন এটিএমে ৫০০ টাকা এসে গিয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এখানেও সমস্যা মিটে যাবে।’’
সমস্যা দ্রুত মেটার আশায় ঘাটালের বাসিন্দারাও।