দিঘার সৈকতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
চারদিনের জেলা সফরে মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের কর্মী সম্মেলন করেন। আর তার জন্য জেলার সমস্ত এলাকা থেকেই দলীয় কর্মীদের নিয়ে যেতে বেসরকারি ও সরকারি মিলে কয়েকশো বাস ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। ফলে এদিন সকাল থেকে জেলার অধিকাংশ রুটে বাস অনেক কম ছিল বলে অভিযোগ। আর এর জেরে স্কুল-কলেজের পড়ুয়া, অফিসযাত্রী-সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে রাস্তায় বের হওয়া মানুষজন গন্তব্যে পৌঁছতে যথেষ্ট হয়রানির শিকার হন।
তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, দিঘা হেলিপ্যাড ময়দানে মঙ্গলবার তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনে জেলার প্রতি বুথ থেকে ১৫ জন কর্মী নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। দলের সাংগঠনিক জেলা তমলুক এলাকা থেকে প্রায় ৩০ হাজার কর্মীকে সম্মেলনে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। এছাড়াও কাঁথি সাংগঠনিক জেলা থেকে কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। এর জন্য এ দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন রুটের বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল। ফলে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য ও জাতীয় সড়ক, দিঘা-মেচেদা, নন্দীগ্রাম-মেচেদা, কাঁথি-এগরা সহ জেলার বিভিন্ন ব্যস্ত রুটে বাস অন্যদিনের তুলনায় যথেষ্ট কম ছিল। আর তাতেই সমস্যায় পড়েন স্কুল, কলেজ এবং অফিসের নিত্যযাত্রী সহ সাধারণ মানুষ। অনেকেই বাড়তি টাকা খরচ করে অন্য গাড়িতে চড়ে যাতায়াত করেন।
বাস মালিকদের সংগঠন পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘জেলায় সব রুট মিলিয়ে প্রায় ১১০০ বেসরকারি বাস চলে। তবে মঙ্গলবার দিঘায় তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনের জন্য প্রায় ৩০০ বাস নেওয়া হয়েছিল। এর ফলে জেলার বিভিন্ন রুটে বাস কিছু কম ছিল। ফলে যাত্রীদের অসুবিধা হয়েছে।’’ এদিন মেচেদা থেকে তমলুক শহরে ব্যাঙ্কে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন শুভজিৎ অধিকারী। শুভজিৎ বলেন, ’’মেচেদা থার্মাল গেট বাস স্টপেজে মেচেদা-হলদিয়া রুটের বাসের জন্য সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রোদে অপেক্ষা করতে হয়েছে। মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে অন্যদিন হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে ৫ মিনিট অন্তর বাস চললেও এদিন আধঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। তমলুক থেকে মেচেদা। ফেরার পথে একই ভাবে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। খুবই অসুবিধা হয়েছে।’’
সম্মেলনের জন্য জেলার বিভিন্ন রুটের বাস নেওয়ায় যাত্রীদের হয়রানির কথা স্বীকার করেছেন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। তিনি বলেন, ‘‘সম্মেলনে কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু বাস ভাড়ায় নেওয়া হয়েছিল। ফলে মানুষের সাময়িক অসুবিধা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে যেতে সব দলই বাস নিয়ে থাকে। মানুষও বিষয়টা বোঝে।’’