পুর-কর্তৃপক্ষ ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছিলেন। তবে সেই অনুরোধ ফিরিয়ে সিদ্ধান্তে অনড়ই থাকল সাফাই মজদুর ইউনিয়ন। ফলে আজ, শুক্রবার থেকে আবর্জনা সমস্যায় পড়তে চলেছে শহর মেদিনীপুর। মজদুর ইউনিয়নের নেতা তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “শ্রমিকেরা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ন্যায্য দাবিতে ধর্মঘট হবেই।” পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “দাবি থাকতেই পারে। তবে পুরসভা ক্ষমতার বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারবে না। আমরা এ কথা ইউনিয়নকে জানিয়েও দিয়েছি।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে পুর- পারিষদদের এক বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন পুরপ্রধান প্রণব বসু, উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস প্রমুখ। পুরসভা সূত্রে খবর, বৈঠকে সাফাই ধর্মঘটের বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়। সিদ্ধান্ত হয়েছে, অনুরোধ ফিরিয়ে সাফাই ইউনিয়ন ধর্মঘট করলে তাকে অবৈধ ঘোষণা করা হবে। প্রসঙ্গত, মজুরি বৃদ্ধি সহ বেশ কয়েক দফা দাবিতে আজ, শুক্রবার থেকে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ওই ইউনিয়ন। ইউনিয়নের বক্তব্য, মেদিনীপুর শহরকে বাসযোগ্য করে রাখার জন্য প্রতিদিন প্রায় পঞ্চাশ ট্রাক্টর আবর্জনা সাফাই করেন পুরসভার প্রায় চারশো সাফাই কর্মী। শহরকে জঞ্জাল- মুক্ত করতে উপযুক্ত পরিকাঠামো এবং আরও বেশি শ্রমিক নিয়োগ প্রয়োজন। অথচ, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ উদাসীন। শ্রমিকদের মজুরিও বাড়ানো হচ্ছে না। পুর- কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, ইতিমধ্যে মজুরি কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। যাঁদের মাসে ২০ দিন কাজ পাওয়ার কথা ছিল, তাঁরা এখন মাসে ২৫ দিন করে কাজ পাচ্ছেন। ইউনিয়ন অবশ্য বঞ্চনার অভিযোগে সরবই। তপনবাবু বলেন, “আমরা শ্রমিকদের উপর বঞ্চনা- অবিচারের সমাধান চাই।”
মেদিনীপুর শহরে আবর্জনা সমস্যা নতুন নয়। শহরের সর্বত্র নিয়মিত আবর্জনা সাফাই হয় না- বলেই অভিযোগ। ফলে, ভ্যাট উপচে আবর্জনা এসে পড়ে রাস্তায়। অগত্যা, পড়ে থাকা আবর্জনা মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয় পথচলতি মানুষকে। শহরবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এক জায়গায় আবর্জনা জমে থাকার ফলে অনেক সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। এই পরিস্থিতিতে লাগাতার ধর্মঘট হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা। ফের ভ্যাট উপচে আবর্জনা রাস্তায় এসে পড়বে। তখন দুর্গন্ধে পথ চলা দায় হবে। এদিন পুর- পারিষদের বৈঠক শেষ হওয়ার পরপরই বিকেলে শহরে মিছিল করে সাফাই মজদুর ইউনিয়ন। পরে এক সভাও হয়। পুর- কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, অন্যায্য দাবি মানা সম্ভব নয়। উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “মনে রাখতে হবে, পুরসভারও একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ ভাবে ধর্মঘট করে মানুষকে সমস্যায় ফেলা
ঠিক নয়।”