Dengue

ডেঙ্গি রুখতে কাজ কই, দুই পুরসভায় ক্ষোভ

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগ, ডেঙ্গির মতো ভয়াবহ রোগ প্রতিরোধের জন্য এখনও পুর এলাকাগুলিতে পুরোদমে শুরু হয়নি সাফ-সাফাইয়ের কাজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া  ও এগরা শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ০৩:৫৫
Share:

পরিষ্কার করা হয়নি। পুকুরে আবর্জনা জমে ছড়াচ্ছে দূষণ। পাঁশকুড়া পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দিনরাত ব্যস্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা। ফি বছর জুন-জুলাই থেকে রাজ্যে শুরু হয় ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব। করোনার জন্য এ বার পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। এই অবস্থায় এখন থেকেই পুরসভা ও পঞ্চয়েতগুলি তৎপর না হলে করোনা নিয়ে অতি সতর্কতার ফাঁক গলে ডেঙ্গি থাবা বসাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন করোনা সংক্রামিত পাঁশকুড়া ও এগরার বাসিন্দারা।

Advertisement

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগ, ডেঙ্গির মতো ভয়াবহ রোগ প্রতিরোধের জন্য এখনও পুর এলাকাগুলিতে পুরোদমে শুরু হয়নি সাফ-সাফাইয়ের কাজ। বিশেষজ্ঞদের মতে এখনই ডেঙ্গি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতর কোমর বেঁধে না নামলে অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গিও স্বাস্থ্য দফতরের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

মশাবাহিত এই রোগে গত বছর পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় কেউ মারা না গেলেও, ডেঙ্গি যে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে একটা সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ তা মানছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারাও।
সাধারণত পুর এলাকাগুলিতেই ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি দেখা যায়। প্রায় দু’দশক আগে পুরসভার তকমা পেলেও নগরায়নের দিকে থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পাঁশকুড়া। বেহাল রাস্তাঘাটের পাশাপাশি শহরের মধ্যে জমে থাকা আবর্জনা, বেহাল নিকাশি নিয়ে শহরবাসীর ক্ষোভ রয়েছে। বেহাল নিকাশির কারণে ফি বছর অল্প বৃষ্টিতেই শহরে একাধিক জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। সেই জমা জলে ডেঙ্গির মশা জন্মানোর সম্ভাবনাও অনেক বেড়ে যায়। ডেঙ্গি তাড়াতে জমা জল নিকা‌শির ক্ষেত্রে বার বারই পুরসভার বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। এমনকী মশার উপদ্রব বাড়লেও পুরসভার তরফে ব্লিচিং ছড়ানো, নালা পরিষ্কার, মশা মারার তেল ছড়ানোর কাজ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। পুরপ্রধান নন্দ কুমার মিশ্র অবশ্য বলেন, ‘‘ডেঙ্গি দমনের জন্য প্রস্তুতি আমাদের সারা আছে। ঠিক সময়েই কাজ শুরু হবে।’’

Advertisement

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ডেঙ্গি দমনের আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এগরা পুরসভার বিরুদ্ধেও। পুরসভার কর্মীরা পুরোদমে ব্যস্ত করোনা মোকাবিলায়।করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জমা জলে মশার লার্ভার উপস্থিতি খতিয়ে দেখায় কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে বলে দাবি শহরবাসীর একাংশের। তবে শহরের চারপাশে জমে থাকা নোংরা আবর্জনা পরিস্কারের কাজ করছেন পুরসভার সাফাই কর্মীরা।

পুরসভার দাবি, করোনা মোকাবিলার নোংরা-আবর্জনা সাফাইয়ের মধ্য দিয়ে ডেঙ্গি দমনের কাজও সেরে ফেলা হচ্ছে। যদিও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে পুরসভা ডেঙ্গি সচেতনতায় কোনও কাজ করছে না। এই অবহেলার কারনে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ার আশংঙ্কা রয়েছে।’’

পুরপ্রধান শঙ্কর বেরার অবশ্য দাবি, ‘‘সরকারি ভাবে এখনও ডেঙ্গি নিয়ে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। পুরকর্মীরা সবাই করোনা মোকাবিলায় ব্যস্ত। করোনা সংক্রমণের ভয়ে এই সময় বাড়িতে ঢুকে খোঁজ নেওয়া সম্ভব নয়। তবে এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে।’’
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলায় ডেঙ্গির প্রকোপ রয়েছে।করোনার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্যস্ত আছেন। তবে আমরা তৈরি আছি। শীঘ্রই ডেঙ্গি দমনে মাঠে নামবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement