বেশ কিছু দিন ধরে রাজনৈতিক চাপান-উতোর চলছে ময়নার বাকচায়। সেখানেই সভা করতে যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
আদালতের নির্দেশ হাতে নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় সভা করতে চলেছে বিজেপি। কিন্তু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সভার কয়েক ঘণ্টা আগে আবার উত্তপ্ত ময়নার বাকচা এলাকা। দলীয় পতাকা ঝোলানো নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল বাকচা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
শনিবার দুপুরে ইজমালিচক ফুটবল মাঠে সভা করতে আসছেন শুভেন্দু। তার আগে শুরু হয় ঝামেলা। বিজেপির অভিযোগ, শুক্রবার রাতে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় দলের পতাকা টাঙাতে গেলে তৃণমূল তাদের বাধা দেয়। বিজেপির পতাকা ছিঁড়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, তাঁদের পতাকা ছিঁড়ে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। এ নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি এবং বচসা শুরু হয়। শনিবার এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে গোটা এলাকা পুলিশি প্রহরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে।
এ নিয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল বলেন, “বেলা ২টো থেকে শুরু হবে সভার কাজকর্ম। সেই উদ্দেশ্যে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে সভাস্থলের আশপাশের এলাকায় বিজেপির পতাকা ঝোলাচ্ছিলেন কর্মীরা। তখনই দেখা যায়, তৃণমূলও প্রচুর পতাকায় এলাকা মুড়ে ফেলার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের কোনও সভা তো নেই! তা সত্ত্বেও কেন পতাকা লাগানো হচ্ছিল জানতে চাওয়ায় আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়। আমাদের দলীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলা হয়। এমনকি আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়।’’ একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল এখন নিজেদের পতাকা ছিঁড়ে ফেলে বিজেপিকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে।”
অন্য দিকে, স্থানীয় তৃণমূল নেতা অনিল কুমার দাসের দাবি, “‘দুয়ারে সরকার’ চলছে বলে এলাকায় তৃণমূলের পতাকা লাগানো রয়েছে। বিজেপির ছেলেরাও রাতে পতাকা টাঙাতে আসে। শুক্রবার গভীর রাতে আমাদের পতাকা ছিঁড়ে ফেলে দেয় বিজেপির লোকজন। বাধা দিতে গেলে আমাদের কর্মীকে বেধড়ক মারধর করে বিজেপির গুন্ডাবাহিনী। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে এলাকায় টহলদারি শুরু হয়েছে।’’
গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার অশান্তির আগুন জ্বলছে ময়নার বাকচা এলাকায়। বিধানসভা নির্বাচনে এই পঞ্চায়েত এলাকায় বিপুল ভোট পেয়েছে বিজেপি। সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই নতুন করে অশান্তি দানা বাঁধছে এলাকায়। ইতিমধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়না থানার ওসি বদল করে একজন আইসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাকচা এলাকায় পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প রয়েছে। আজ বিজেপির সভাকে কেন্দ্র করে নতুন করে অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কায় এলাকায় পুলিশের টহলদারিও বাড়ানো হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।