আহতের থেকে ঘটনার বিবরণ নিচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
পরপর চুরি-ছিনতাই হচ্ছিলই। এ বার দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার— এমনই অভিযোগে আতঙ্ক ছড়িয়েছে দাসপুরে।
অভিযোগ, গরু চুরি করতেই জড়ো হয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সকলের মুখ কালো কাপড়ে বাঁধা ছিল। মিনি ট্রাক নিয়ে এসেছিল তারা। টহলরত ওই সিভিক ভলান্টিয়ার দুষ্কৃতীদের তাড়া করতেই পাল্টা হামলা হয়। ওই সিভিককে মাটিতে ফেলে লোহার রড দিয়ে মারধরের করে মোবাইল কেড়ে নিয়ে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয় বলে অভিযোগ।
শুক্রবার রাতে দাসপুর থানার খুকুড়দহ লাগোয়া লক্ষ্মীকুণ্ডু গ্রামের ওই ঘটনায় জখম বিদেশ সাঁতরা নামে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘাটালের এসডিপিও অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, “ওই সিভিকের তৎপরতায় গরু চুরি করতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। আর দুষ্কৃতীদের একটি চক্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্রুতই সবাই ধরা পড়বে।”
পুলিশের এক সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে খুকুড়দহ এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন বিদেশ। গয়লাখালি লক্ষ্মীকুণ্ডু গ্রামীণ রাস্তায় একাই টহল দিচ্ছিলেন তিনি। অভিযোগ, লক্ষ্মীকুণ্ডু গ্রামেই এক বাসিন্দার গোয়ালঘরের সামনে জড়ো হয়েছিল জনা পাঁচেক দুষ্কৃতী। সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল মিনি ট্রাকটি। সেখানেও দু’জন ছিল। তাদের দেখে সন্দেহ হতেই চিৎকার শুরু করেন সিভিক ভলান্টিয়ার বিদেশ। টহলরত পুলিশের গাড়ির সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগেরও চেষ্টা করেন তিনি। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের মুখে টর্চ ফেলে গরু চোররা মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। লোহার রড দিয়ে মাথা-সহ তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করা হয়। তারপর রক্তাত্ত অবস্থায় বিদেশকে ফেলে রেখে তাঁর মোবাইল কেড়ে নিয়ে মিনি ট্রাক চালিয়েই দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছয় দাসপুর থানার পুলিশ। আহত সিভিক ভলান্টিয়ারকে উদ্ধার করে ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে ভর্তি করানো হয়। দুষ্কৃতীদের ধরতে ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়ক-সহ আশপাশের গ্রামীণ রাস্তাতেও তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। কারও নাগাল পাওয়া যায়নি।
মাস দেড়েক ধরে একের পর এক চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে দাসপুর থানা এলাকায়। কখনও সোনা-রুপোর দোকানে, কখনও আবার ফাঁকা বাড়িতে তালা ভেঙে লুটপাট চালাচ্ছে। পুলিশি অভিযানে একাধিক ঘটনায় দুষ্কৃতীরা ধরাও পড়েছে। খোওয়া যাওয়া মালপত্র উদ্ধার হচ্ছে। এরই মধ্যে গরু চুরি চক্রের বিষয়টি সামনে এল।
দাসপুরের বাসিন্দাদের অনেকেই মনে করিয়ে দিয়েছেন, অনেক আগে এলাকায় দাসপুরে গরু চুরি চক্রের একটি গোষ্ঠী সক্রিয় ছিল। এর আগেও তালা ভেঙে গোয়ালঘর ফাঁকা করে গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।