নিজস্ব চিত্র
আমজনতার সঙ্গে জনসংযোগ বাড়াতে ‘দিদিকে বলো’র সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই কর্মসূচিতেই তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিকে চিনতে পারলেন না হলদিয়াবাসী।
শিল্পশহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বুধবার কড়া নাড়ার শব্দ শুনে দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছিলেন গৃহকর্ত্রী। দরজায় তখন দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি তথা হলদিয়ার পুর পারিষদ (জল ও ক্রীড়া) শেখ আসগর আলি। অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিকে চিনতে পারেননি ওই মহিলা। শেষে স্থানীয় কাউন্সিলার বিমল মাঝিই জানান আসগরের পরিচয় এবং বাড়িতে আসার উদ্দেশ্য।
‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে এ দিন হলদিয়া টাউন ব্লক যুব তৃণমূলের আহ্বায়ক আসগর জি-ব্লক, নিউ কলোনি, পাতিখালি-সহ একাধিক এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। শোনেন তাঁদের অভাব অভিযোগ। কর্মসূচি চলাকালীন আসগর হাজির হন একটি বাড়িতে। সেখানেই তাঁকে ওই ‘ধাক্কা’ খেতে হয়।
অবশ্য শুধু ওই বাড়ি নয়, দিদিকে বলো কর্মসূচিতে এ দিন পাঁচটি বাড়িতে যান আসগর। তার মধ্যে দু’টি বাড়ির লোকই তাঁকে চিনতে পারেননি। এতে খানিকটা অপ্রস্তুতে পড়েন আসগর। তবে পরিচয়পর্ব মিটে যাওয়ার পরই বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন এলাকাবাসী। জানান, কর্মসংস্থান, উদ্বাস্তুজনিত নান সমস্যা রয়েছে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা মণিমালা করণ বলেন, ‘‘আসলে ওঁর নাম শুনেছি। কোনওদিন চোখে দেখিনি। তাই প্রথমে চিনতে পারিনি। কথা বলতেও অস্বস্তি হচ্ছিল। হলদিয়ায় বেকারত্ব বাড়ছে। জলের সংযোগ না আসায় ওয়ার্ডের শিশুবিকাশ কেন্দ্র শুরু হতে পারেনি। ওঁকে সব জানিয়েছি।’’
আসগর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলারও বটে। নিজের এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয়ও। হলদিয়ায় কার র্যালির সঙ্গেও যুক্ত। শাসকদলের এমন জনপ্রতিনিধিকে আমজনতা কেন চিনতে পারলেন না? এ ব্যাপারে পুর পারিষদের সাফাই, আসলে মানুষ তাঁকে ডাক নামে চেনেন। আসগর বলেন, ‘‘এই অঞ্চলে পল্টু হিসাবেই আমি বেশি পরিচিত। কারও কাছে ভাই, কারও কাছে দাদা। আসলে খুব কাছের মানুষকেই তো আমরা ডাকনামে ডাকি। আমি মানুষের মনের কাছাকাছি রয়েছি, তাই মানুষ আমাকে ভাল নামে চেনেন না, চেনেন ডাকনামে।’’
তবে পুর পারিষদ যাই বলুন না কেন, বিরোধীদের কটাক্ষ— এলাকায় না গেলে জন সাধারণ জন প্রতিনিধিকে চিনবেন কী করে! এ ব্যাপারে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘মানুষের সঙ্গে সংযোগ নেই বলেই মানুষ তৃণমূল নেতাদের চিনতে পারছেন না। এই ঘটনা তারই প্রমাণ।’’