খানাতল্লাশি চলছিল। এ বার ভারতী ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ পুলিশ আধিকারিকদের ধরপাকড় শুরু করল সিআইডি। ভারতীর নামেও সরাসরি মামলা হল। সোনা কেনার নামে প্রতারণার অভিযোগে সেই মামলা হয়েছে দাসপুর থানায়, যেখানে রুজু করা অন্য মামলার সূত্রেই এতদিন অভিযান চালিয়েছে সিআইডি।
দাসপুর থানার পুরনো মামলাতেই শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছে মহিষাদলের এসআই শুভঙ্কর দে এবং ডেবরার প্রাক্তন ওসি (বর্তমানে ক্লোজ) চিত্ত পালকে। শুভঙ্করের বাড়ি থেকে হিসাব বর্হিভূত ৪০ লক্ষ এবং চিত্তের বাড়ি থেকে ১৬ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে সিআইডি জানিয়েছে। আজ, শনিবার তাঁদের আদালতে হাজির করানো হবে।
দাসপুরের মামুদপুরের এক যুবক পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে নতুন মামলাটি করেছেন। গত মঙ্গলবার দায়ের করা এই অভিযোগে ভারতী ছাড়াও নাম রয়েছে দাসপুরের প্রাক্তন ওসি প্রদীপ রথ এবং সোনা ব্যবসায়ী বিমল ঘোড়ইয়ের। বিমল আগেই গ্রেফতার হয়েছেন। ‘ক্লোজ’ হয়েছেন প্রদীপ। মেদিনীপুর আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার রাতে ভারতীর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের মামলা হয়েছে খড়্গপুর গ্রামীণ থানাতেও। এ ক্ষেত্রে অভিযোগকারী উত্তর চব্বিশ পরগনার ব্যবসায়ী ইউনুস আলি মণ্ডল।
মামুদপুরের যুবক সংবাদমাধ্যমে নাম জানাননি। ভিন্ দেশে সোনার কাজ ছেড়ে বছর দু’য়েক আগে গ্রামে ফেরেন তিনি। তাঁরও অভিযোগ, নোটবন্দির সময় বিমল তাঁকে সোনা জমার স্কিমের কথা শোনায় এবং তার ‘মাথা’ হিসাবে ভারতীর নাম জানায়। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকিও দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে ২০০ গ্রাম সোনার গয়না দিলেও টাকা মেলেনি। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ হচ্ছে।”
বৃহস্পতিবার মাদুরদহের ফ্ল্যাট থেকে বাজেয়াপ্ত করা সরকারি ফাইলের বিষয়ে জানতেও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছে সিআইডি। ওই ফ্ল্যাটে দু’দিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের এবং চাকরির পুলিশি শংসাপত্র মিলেছে। শুক্রবার ঘাটাল আদালতে একটি ফ্ল্যাটের মালিক গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। ভারতী এ দিনও সিআইডি-কে বিঁধেছেন। বলেছেন, ‘‘মনে হয় ফাইলের পা গজিয়েছে। সিআইডি অফিসাররা তো পাঁচ দিন ধরে ফ্ল্যাটে ছিলেন। প্রথমেই কেন সরকারি নথি পেলেন না!’’
ভারতীর স্বামী এম এ ভি রাজুর আইনজীবী এ দিন নেতাজিনগর থানাকে জানিয়েছেন, মক্কেল হাসপাতালে থাকায় হাজিরা দিতে এক সপ্তাহ লাগবে। আনন্দপুর থানা এবং সিআইডি-ও রাজুকে তলব করেছে।