হেফাজতে: তমলুক আদালতে নিরঞ্জন সিহি। নিজস্ব চিত্র
বাম বিক্ষোভে ভাঙচুরের ঘটনায় জেল হেফাজতেই রয়েছেন তিনি। এ বার সতেরো বছরের পুরনো একটি খুনের মামলায় সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহিকে হেফাজতে নিল সিআইডি।
বাম আমলে ২০০৯ সালে ওই মামলা থেকে অন্যদের সঙ্গে বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন নিরঞ্জনবাবু। ফের ওই মামলাতেই তাঁকে সিআইডি হেফাজতে নেওয়ায় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে বামেরা। সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধান বলছেন, ‘‘এটা মিথ্যা মামলা। এই ধরনের মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।’’ একইভাবে, এ দিন এজলাস থেকে বেরনোর পথে নিরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এটা করা হচ্ছে।’’
গত ১১ সেপ্টেম্বর তমলুক শহরে জেলাশাসকের অফিসের সামনে বামেদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, পুলিশকে মারধরের অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন নিরঞ্জনবাবু। ফের পুরনো মামলায় নাম জড়ানোয় পুজোর মুখে বিপাকে পড়লেন এই সিপিএম নেতা। পুরনো ঘটনাটি ২০০০ সালের ৬ নভেম্বরের। তখন অবিভক্ত মেদিনীপুরের হাউর (বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরে) এলাকার মুরলিচক গ্রামের তৃণমূল সমর্থক সুবল দোলই, তাঁর ভাই নিরঞ্জন দোলই, ভাইপো প্রতাপ দোলইকে সিপিএমের লোকজন অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনার মাস তিনেক আগে বাড়ি ফিরে আসেন নিরঞ্জন ও প্রতাপ। তবে সুবল আর ফেরেননি। ওই ঘটনাতেই নিরঞ্জনবাবু-সহ ৮জনের বিরুদ্ধে পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুবলবাবুর স্ত্রী বিজলি দোলই। নিরঞ্জনবাবু তখন সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য ও জেলা পরিষদ সদস্য।
তমলুক মহকুমা আদালতে চার্জশিট পেশের পরেও ২০০৯ সালে ওই মামলায় বেকসুর খালাস পান নিরঞ্জনবাবুরা। তবে ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর সুবলবাবুর পরিজনেরা ঘটনার সিআইডি তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানান। হাইকোর্ট পুনরায় তদন্তের ভার দেয় সিআইডিকে। এরপরে সুবলবাবুর স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি নিরঞ্জনবাবুদের বিরুদ্ধে অপহরণ, খুন, প্রমাণ লোপাটের মামলা দায়ের করে।
হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেও অবশ্য সুরাহা হয়নি। শেষমেশ এ দিন ওই মামলাতেই নিরঞ্জনবাবুকে সাতদিনের সিআইডি হেফাজতে পাঠিয়েছেন তমলুকের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।