ফাইল চিত্র।
আগামী বিধানসভা ভোটে ছত্রধর মাহাতোই হবেন জঙ্গলমহলে ‘তৃণমূলের মুখ’। ইতিমধ্যে এ বার্তা পৌঁছে গিয়েছে নেতা-কর্মীদের কাছে। কিন্তু কী হবে ছত্রধরের ভূমিকা, শুক্রবার তারই কিছুটা ইঙ্গিত দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শাসক দল সূত্রের খবর, এ দিন জেলা সভাপতি, ও নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতাকে ছত্রধরের উদ্দেশে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘৭ তারিখ মেদিনীপুরের সভায় আসবে। তোমার সঙ্গে অনেক কথা আছে। তোমাকে দেখে ২০০৮ সালের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। ওই সময়ে তোমার নেতৃত্বে বড় মিটিং হয়েছিল। আমিও গিয়েছিলাম। একসঙ্গে সভা করেছিলাম’।
প্রায় এক যুগ আগে পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণের কমিটির মুখ ছিলেন ছত্রধর। তখন তাঁর মিছিলে উপচে পড়ত ভিড়। কমিটির হয়ে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি হোক বা তৎকালীন বাম প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা— সামনের সারিতে থাকতেন ছত্রধর। সে সময়ের বিরোধী নেত্রী মমতা এখন মুখ্যমন্ত্রী। সে সময়ের কমিটির নেতা ছত্রধর এখন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। বিগত কয়েকটি ভোটের ফলাফল বলছে, আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গলমহলে শাসকের ভোটব্যাঙ্কে ধস নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে নেত্রী যেভাবে ছত্রধরের ভূমিকা স্মরণ করলেন তাকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।এদিন বৈঠক নিয়ে খোলসা করে কিছু বলতে চাননি ছত্রধর। তিনি কেবল বলেন, ‘‘নেত্রী আমাকে ৭ তারিখে মেদিনীপুরের সভায় যেতে বলেছেন। আমি যাব।’’
দলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু, জেলা চেয়ারম্যান বিরবাহা সরেনের নাম ধরে ডেকে দলের কাজকর্ম ঠিকমতো চলছে কি-না খোঁজ নিয়ে মমতা ফের বলেন, ‘‘সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে।’’ মমতা বলেন, ‘‘দলের ভিতরে থেকে শত্রুতা করবেন না। যে এরকম করে তাঁকে আমি ঘৃণা করি। বাইরে থেকে যাঁরা শত্রুতা করে তাঁদের আমি রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করি।’’ মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি ভয় দেখানোর নানা চেষ্টা করবে। আপনারা ভয় পাবেন না। যারা বিজেপি-র ভয়ে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে তারা যাক। আমার একজন লুঠেরা যাবে, এক লক্ষ সম্পদ তৈরি হবে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্বকেও একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন মমতা। বৈঠকে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রসঙ্গ আসাকালীন দলনেত্রীর মুখে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, বিধায়ক দীনেন রায়, প্রদ্যোত ঘোষ, আশিস চক্রবর্তী প্রমুখের নাম শোনা গিয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। মমতা বলেছেন, "সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আরও ভাল ভাবে কাজ করতে হবে।"
এ দিন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী মমতার লড়াইয়ের কথা দলের নেতাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘আপনারাও লড়াইয়ের ময়দান ছাড়বেন না।’’