সোমেশ মিশ্র(মাঝে)।
ক্যানসারে আক্রান্ত নাবালক ছেলে। চিকিৎসার অর্থ আসবে কোথা থেকে! দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন বাবা। শেষে তিন লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য আসল খাস প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে
রামনগরের দেপাল হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র সোমেশ মিশ্রের সম্প্রতি ক্যানসার ধরা পড়ে। তাঁর বাবা লোকনাথ মিশ্র রামনগর-২ ব্লকের কাদুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরের গ্রুপ-ডি কর্মী। পারিবারিক সূত্রের খবর, ২০১৩ সালে পড়ে গিয়ে হাতের হাড় ভেঙেছিল সোমেশের মায়ের। সেবার বহু কষ্টে টাকা জোগাড় করে কোনও রকমে অস্ত্রপ্রচার হয়েছিল। কিন্তু আর্থাভাবে আজও হাতের ভিতর থাকা মেডিকেটেড প্লেট বার করা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে সোমেশের ইউরিনারি সেকশনে ক্যানসার ধরা পড়ে। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, রোগডো মায়ো জারকোমা অসুখে আক্রান্ত হয়েছে দেপালের ওই ছাত্র। অসুস্থ হওয়ার কারণ সোমেশ এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষাও দিতে পারেনি।
নিম্ন মধ্যবিত্ত সংসারে ছেলের এমন কঠিন অসুখ ধরা পড়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েন বাবা-মা। কী করণীয়, তা ভেবে পাচ্ছিলেন না লোকনাথবাবু। ওই সময় তিনি জানতে পারেন, এগরার মির্জাপুরের বাসিন্দা শম্ভু চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি একই রোগে আক্রান্ত। সাহায্য ও পরামর্শের আশায় শম্ভুবাবুর কাছে যান সোমেশের বাবা। বিজেপি’র যুব মোর্চার কাঁথি সাংগাঠনিক জেলার সম্পাদক শম্ভুবাবু তাঁদের তামিলনাড়ুর ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসা চলছে সোমেশের। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন অনেক টাকার।
শম্ভুবাবু ওই দরিদ্র ছাত্রকে সাহায্যের জন্য মনোনীত সাংসদ জর্জ বেকারকে অনুরোধ করেন। ওই সাংসদ সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সোমেশকে টাকা দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। তার পরেই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সোমেশের নামে তিন লক্ষ টাকা চিকিৎসা খরচ বাবদ বরাদ্দ হয়েছে।
ভেলোর চিকিৎসার মাঝে কিছুদিনের জন্য দেপালের বাড়ি এসেছে সোমেশের পরিবার। বৃহস্পতিবার তাঁদের বাড়িতে গিয়ে সোমেশের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন শম্ভুবাবু। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সাহায্য পেয়ে অভিভূত লোকনাথবাবু। এ দিন তিনি বলেন, “শম্ভুবাবুর উদ্যোগে ওই সহযোগিতা পেলাম। উনি না থাকলে কী যে হত, তা ভেবে পাচ্ছি না।’’
শম্ভুবাবুর কথায়, ‘‘সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। ছোটবেলায় পড়েছিলাম। বাস্তব জীবনে তা ভুলে যায়নি। তাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই। আমিও একই রোগী। তাই সোমেশের যন্ত্রণাটা আরও বেশি অনুভব করতে পেরেছি। ও সুস্থ হয়ে উঠুক, এই কামনা করি।’’