সোমবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরের রাস্তায় রথের পসরা। নিজস্ব চিত্র Stock Photographer
এবার রথযাত্রা হচ্ছে পঞ্চায়েত ভোটের আবহে। তাই আজ, মঙ্গলবার রথের রশিতে ভক্তদের সঙ্গে ভোটপ্রার্থীদেরও হাত পড়বে। হাজার হাজার মানুষের সমাগমের মধ্যে হয়ে কার্যত ভোটযাত্রা শুরু করবে রাজনৈতিক দলগুলি—আঁচ মিলছে সেরকমই।
শালবনিতে শালবনি সদরের পাশাপাশি মণ্ডলকুপি, চকতারিনী প্রভৃতি এলাকা, কেশপুরে কেশপুর সদরের পাশাপাশি খেতুয়া-সহ কিছু এলাকায় রথ বেরোয়। মেদিনীপুর গ্রামীণের বিভিন্ন এলাকায় রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়। গড়বেতার মায়তা, গোয়ালতোড়ের হুমগড়েও রথযাত্রা হয় ধুমধামের সঙ্গে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রার্থীরা এই সব জায়গায় রথযাত্রায় যোগ দেবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সবংয়ের নওগাঁ, মোহাড়, উচিতপুর, ডেবরার মাড়তলা, দত্তবাড়ির রথে প্রতিবারের মতো এবারও জাঁক থাকবে। থাকার কথা পঞ্চায়েতের প্রার্থীদেরও।
রাজনৈতিক নেতাদের অনেকে অবশ্য ভোট প্রচারে রথের ব্যবহারের বিষয়টি সরাসরি মানছেন না। সবং ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আবু কালাম বক্স বলেন, "আমরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না। রথযাত্রায় প্রতিবার যেমন থাকি, এবারও থাকব।" একই মত তৃণমূলের ডেবরা ব্লক সভাপতি বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়ের। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তন্ময় দাস বলেন, "রথযাত্রায় কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগকে কাজে লাগাতে চাই না। প্রতিবারের মতো এবারও আমরা যেমন পরিচালনা করি, তেমনই করব।" মেদিনীপুর জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস অবশ্য জানান, যেখানে উৎসব হয়, সেখানে দলীয় প্রার্থীরা নিশ্চিতভাবে যাবেন। উৎসবে যোগ দেবেন। তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, "আমাদের দিদি তো বলেছেন, ধর্ম যাঁর যাঁর, উৎসব সবার। নিজ নিজ এলাকায় রথের উৎসবে দলীয় প্রার্থীরা যোগ দেবেন।"
ঝাড়গ্রাম জেলায় গোপীবল্লভপুর, লালগড় ও বেলপাহাড়ি এলাকায় ধুমধাম সহকারে রথযাত্রা পালিত হয়। চারশো বছরের প্রাচীন গোপীবল্লভপুরের রথেও উৎসবের আমেজ। হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয়। গোপীবল্লভপুর-১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি হেমন্ত ঘোষ বলেন, ‘‘ভোটের আগে রথ। উৎসবের পাশাপাশি প্রচারও এবার ভাল হবে।’’ বেলপাহাড়ি ব্লকে তৃণমূলের জেলা পরিষদের প্রার্থী বিরবাহা সরেন টুডুও বলেন, ‘‘বেলপাহাড়ি রথের উৎসবে যোগ দেব। জনসংযোগও হবে।’’ ঝাড়গ্রাম জেলার বিজেপি অবশ্য রথের রাজনীতি থেকে দূরে থাকার কথাই বলছে। ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির নেতা মণিচাঁদ পানি বলেন, ‘‘রথযাত্রার মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আমরা রাজনীতি করতে চাই না।’’