কড়া-নজর: ভোটকেন্দ্রের পথে ভোটাররা। বুধাবর। নিজস্ব চিত্র
বিরোধীদের ভোট বয়কটেও বুধবার পাঁশকুড়ার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৫ নম্বর বুথে ভোট পড়ল প্রায় ৮১ শতাংশ।
এ দিন পূর্ব ঘোষণা মতো ছিল না বিরোধী দলের প্রার্থী কিংবা পোলিং এজেন্টদের উপস্থিতি ছিল না এই বুথে।
রবিবার রাজ্যের সাত পুরসভার ভোটে পাঁশকুড়ার ১৮ ওয়ার্ডে ভোট হয়। কিন্তু ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে রানিহাটি হাইস্কুলের ৪৫ নম্বর বুথে তৃণমূলের লোকেরা ছাপ্পা ভোট দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে দুপুর আড়াইটা নাগাদ নির্দল প্রার্থী তথা সিপিএম নেতা সহ একদল কর্মী ভোটযন্ত্র ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ওই সিপিএম নেতা লিয়াকত মল্লিককে। ঘটনার জেরে ওই বুথে ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। ওই বুথে বুধবার ফের ভোট নেওয়া হবে বলে ঘোষণা করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু পুনর্নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা ঘোষণা করে সিপিএম জেলা নেতৃত্ব। যদিও তৃণমূলের দাবি, সিপিএমের তরফে এদিন এক কর্মীর বাড়িতে বুথ অফিস খোলা হয়েছিল। সমর্থকরাও এ দিন ভোট দিতে এসেছেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, পুনর্নির্বাচন নিয়ে এ দিন নিরাপত্তা ছিল যথেষ্ট। র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স-সহ প্রায় ৬০ জনের পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয় রানিহাটি হাইস্কুলের ওই বুথে। ছিলেন জেলার পদস্থ পুলিশ কর্তারা। কড়া পুলিশ পাহারায় ভোট হয় শান্তিপূর্ণভাবে। এদিন ভোট দিতে আসা মনোয়ারা বিবি, সেখ সাহজামাল বলেন, ‘‘আগের দিনেও ভোট দিয়েছিলাম। আজ ফের দিলাম। তবে সেদিন এত পুলিশ ছিল না। আজ নিশ্চিন্তেই ভোট দিয়েছি।’’
এদিন বুথের কাছে বিরোধী বাম সমর্থিত নির্দল ও বিজেপি প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট বা নেতা-কর্মীদের দেখা না মিললেও দলবল নিয়ে ছিলেন পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা নন্দকুমার মিশ্র, জাইদুল খান, তমলুকের তৃণমূল নেতা দিব্যেন্দু রায়, রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র প্রমুখ। ৭৮৫ জন ভোটারের এই বুথে সকাল ১১ টার মধ্যে ৬১ শতাংশ ও দুপুর ১ টা পর্যন্ত ৭৫ শতাংশ ভোট পড়ে যায়। বিকেল ৫ টা পর্যন্ত প্রায় ৮১ শতাংশ ভোট পড়ে। ভোটে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা সত্ত্বেও বিপুল হারে ভোট পড়া নিয়ে সিপিএম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। তাই এদিনের ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। ভোটের হিসেব নিয়েও আমাদের আগ্রহ নেই।’’ বিজেপির জেলা কোষাধ্যক্ষ নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘ভোটের প্রচারে ওই ওয়ার্ডে আমাদের প্রার্থী তাপস পালকে অপহরণ করে মারধর করেছিল তৃণমূল। রবিবার ওরা ছাপ্পা ভোট দিয়েছে। নিরাপত্তা না থাকায় এদিন পোলিং এজেন্ট দেওয়া হয়নি। তবে ভোট বয়কটও করিনি। ভোট দেওয়ার বিষয়টি স্থানীয় মানুষের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।’’
বিরোধীদের অভিযোগ নিয়ে সৌমেনবাবু বলেন, ‘‘ভোটযন্ত্র ভাঙচুরের ঘটনায় সিপিএম নেতা-কর্মীরা জড়িত। তাই মানুষের নজর ঘোরাতে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সিপিএম ভোট বয়কটের কথা বলেছে। এদিনও বেশিরভাগ মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়ে সিপিএম নেতাদের অভিযোগ যে অসাড় তা প্রমাণ করেছেন।’’