মণ্ডপে জমে রয়েছে জল। মেদিনীপুর শহরের বার্জটাউনে।
দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে ব্যাহত হচ্ছে পুজোর প্রস্তুতি। কয়েকটি মণ্ডপে কাজ প্রায় বন্ধ। বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে। আকাশ ছিল কালো মেঘে ঢাকা। সময়ে কাজ শেষ করতে গড়বেতার তিনটি ব্লকের বড় পুজো কমিটিগুলি বাজেট বাড়াচ্ছে। পুজোতেও এমন আবহাওয়া থাকতে পারে সেটা আঁচ করে এখন থেকেই অতিরিক্ত বাঁশ, ত্রিপল দিয়ে কিনছে পুজো কমিটিগুলি।
গড়বেতার একটি মণ্ডপের সামনে এখন হাঁটু সমান জল। চন্দ্রকোনা রোডের একটি বড় বাজেটের মণ্ডপের সামনের রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে গিয়েছে। গোয়ালতোড়ের একটি মণ্ডপে কাজ করতে এসেছেন কাঁথির শ্রমিকেরা। টানা বৃষ্টিতে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। হুমগড় সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির সম্পাদক রাজশেখর পণ্ডা বলেন, ‘‘এ বার পুজোর সময়েও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই বাজেটে ৩০ হাজার টাকা বাড়িয়ে মণ্ডপ ও দর্শনার্থীদের দাঁড়াবার স্থান পোক্ত করা হচ্ছে।’’ গড়বেতা স্টেশন সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সভাপতি তাপস চন্দ্র জানান, আবহাওয়ার কথা ভেবে বাজেট বাড়িয়েই সব কিছু করতে হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘পুজো তো আর মাটি হতে দেওয়া যায় না।’’ চন্দ্রকোনা রোডের দুর্লভগঞ্জ আদি সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সদস্য সুরজিৎ তেওয়ারি ও গোয়ালতোড়ের একটি সর্বজনীন পুজো কমিটির সদস্য চন্দন সাহা জানান, আবহাওয়ার কথা ভেবে পুজোর বাজেট বাড়াচ্ছেন না।
মেদিনীপুর শহরের অনেক পুজো মাঠে হয়। মাঠগুলিতে জল জমে গিয়েছে। ফলে, কাজ এগোনো যাচ্ছে না। মেদিনীপুর শহরের বিধাননগর পূর্ব সর্বজনীনের অন্যতম উদ্যোক্তা চম্পক দত্ত বলেন, ‘‘কাজ সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে কি না সে নিয়ে ভীষণ চিন্তায় আছি আমরা।’’ একই আশঙ্কায় রয়েছেন রাঙামাটি সর্বজনীনের অন্যতম উদ্যোক্তা সুশান্ত ঘোষ, শরৎপল্লি সর্বজনীনের অন্যতম উদ্যোক্তা সঞ্জয় হাজরাও। যে সব মণ্ডপের কাজ প্রায় শেষের দিকে, বেশি সমস্যায় পড়েছেন সেই সব পুজোর উদ্যোক্তারাই। এগিয়ে গিয়েও বৃষ্টির জেরে পুজোর প্রস্তুতিতে ফের যেন পিছিয়ে পড়ছেন তাঁরা। সংযুক্তপল্লী সর্বজনীনের অন্যতম উদ্যোক্তা সুবীর সামন্তের কথায়, ‘‘রাত-দিন এক করে কাজ করতে হবে। না-হলে পুজোর আয়োজন সারা হবে না।’’
মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগরপল্লির বাসিন্দা মৃৎশিল্পী আশিস দে বলেন, ‘‘কিছু প্রতিমার মাটি শুকোয়নি। রংও শুকোচ্ছে না। রোদের জন্য অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই!’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখন তো আকাশের মুখ দেখে বোঝারও উপায় নেই এটা শরৎ না বর্ষাকাল!’’ নিজস্ব চিত্র