চালু হয়নি জলপ্রকল্প। ইনসেটে মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাসের ফলক।
এলাকার জলসঙ্কট মেটাতে ঘটা করে পানীয় জল প্রকল্পের উদ্বোধন করে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর তিন বছর কেটে গিয়েছে, চালু হয়নি ব্রজলালচক পাম্পিং স্টেশন। নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ওই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা না মেটায় ক্ষুব্ধ পুর এলাকার বাসিন্দারা। লোকসভা ভোটের আগে এই ক্ষোভ নিয়ে অস্বস্তিতে শাসক দল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়ার ব্রজলালচকের চকদ্বীপা মৌজায় একটি জলাধার ও পাম্পিং স্টেশন গড়ে তোলার কাজ অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এখনও সেই জলাধার থেকে পানীয় জল পরিষেবা মেলে না বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। স্থানীয়দের দাবি, হলদিয়া পুর এলাকার ঘোষের মোড়ের কাছে পাইপ লাইন পাতার কাজ দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বর জলাধার ও পাম্পিং স্টেশনের উদ্বোধন হয়েছিল। জেলা সফরে নন্দকুমারে এসে হলদিয়ার একাধিক ওয়ার্ডে পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে গুরুত্বপুর্ণ এই প্রকল্প উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এই জলাধার থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে শিল্পশহর হলদিয়ার একাধিক ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহের কথা ছিল। পুর এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এখনও পাইপ লাইন পাতার কাজ করতে পারেনি পুরসভা। মহিষাদলের গেঁওখালি থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল এসে চকদ্বীপা পাম্পিং স্টেশনে জমা হবে। সে জন্য চৈতন্যপুর থেকে যে পাইপ লাইন দুর্গাচকের দিকে গিয়েছে, সেখান থেকেই একটি পৃথক লাইন পাতা হবে জলাধার পর্যন্ত। চৈতন্যপুর থেকে যে পাইপ লাইন পাতা হচ্ছে তা জলাধারের কিছুটা দূরে ঘোষের মোড়ে আটকে গিয়েছে। ওই এলাকায় একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি তেল শোধনকারী সংস্থার পাইপ লাইন রয়েছে। তাই সেখানে পানীয় জলের পৃথক পাইপ লাইন পাতা অসম্ভব বলে জানিয়েছে ঠিকাদার সংস্থা।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
হলদিয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘোষের মোড় এলাকায় একটি ওভার ব্রিজ তৈরি করে তার উপর দিয়ে পাইপ লাইন পাতা হবে। ইতিমধ্যে অম্রুত প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়ে গিয়েছে। হলদিয়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শঙ্কর প্রসাদ নায়েক বলেন, ‘‘পাম্পিং স্টেশনের কাজ শেষ। পাইপ লাইনের কাজ এখনও শেষ না হওয়াতেই জল পরিষেবা চালু করা সম্ভব হয়নি।’’
হলদিয়ার পুর পারিষদ (পানীয় জল) সত্যব্রত দাস জানান, ওই পাম্পিং স্টেশন দ্রুত চালুর চেষ্টা চলছে। তবে একাধিক ওয়ার্ডে পাইপ লাইন পাতার কাজ শেষ। তার জন্য ৯ জন ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। ঠিকাদাররা জানিয়েছেন, কমপক্ষে আরও মাস তিনেক সময় লাগবে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়া জলাধার ও পাম্পিং স্টেশন ঠিক কবে চালু হবে, তা নিয়ে এখনও সংশয়ে হলদিয়ার কয়েক হাজার বাসিন্দা।