হাতির দেহ। শালবনির বান্দি এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির মৃত্যু ঘিরে ফের শোরগোল পড়ল জেলায়। এ বারের ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির বান্দি এলাকার। সোমবার সকালে এই এলাকার জঙ্গলে হাতিটির দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়েরা। খবর পেয়ে পৌঁছন বনকর্মীরা। হাতিটির মৃত্যুর কারণ নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা রয়েছে। এ দিনই তার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে।গত শুক্রবারই গোয়ালতোড় থানার তমাল নদীতে একটি হস্তি শাবকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। ওই ঘটনার তিন দিনের মাথায় এ বার পূর্ণবয়স্ক হাতির দেহ উদ্ধার হল শালবনির বান্দির জঙ্গলে। মেদিনীপুরের ডিএফও সন্দীপ বেরোয়াল বলেন, ‘‘মত্যুর কারণ এখনই বলা মুশকিল। ময়নাতদন্ত হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।’’ স্থানীয়দের একাংশের মতে, হতে পারে হাতিটি অসুস্থ ছিল। কোনও অসুখে ভুগছিল। মেদিনীপুরের অন্য এক বন আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘এমন কোনও খবর আমাদের কাছে ছিল না। এটুকু বলতে পারি, বাইরে থেকে দেখে হাতিটির অসুস্থতার কোনও লক্ষণ চোখে পড়েনি। কোনও আঘাতের চিহ্নও চোখে পড়েনি। হাতিটির মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।’’ দিন কয়েকের মধ্যেই প্রাথমিক রিপোর্ট দফতরে চলে আসার কথা।শালবনির বান্দি এলাকাটি বন দফতরের মেদিনীপুর ডিভিশনের লালগড় রেঞ্জের অন্তর্গত। এখন একাধিক এলাকায় হাতির দল রয়েছে। সন্ধ্যা হলেই দলগুলি খাবারের সন্ধানে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়ছে। লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। বন দফতর সূত্রে খবর, সোমবার চাঁদড়া রেঞ্জের ললিতাশোলে ১২টি হাতির একটি দল ছিল, আমঝর্নায় একটি হাতি ছিল। লালগড় রেঞ্জের খাসজঙ্গলে দু’টি, বান্দিতে ২৭-২৮টি হাতি ছিল। আড়াবাড়ি রেঞ্জের জোড়াকুশমিতে ২২-২৫টি হাতি ছিল। এলাকায় হাতির দল থাকায় স্থানীয়দের সতর্কও করছে বন দফতর। এই সময়ে জঙ্গলে না যাওয়ার কথা জানানো হচ্ছে। এ দিন সকালে স্থানীয় কয়েকজন বান্দির জঙ্গলে গিয়েছিলেন। তাঁরাই প্রথম হাতির দেহটি দেখেন। পরে বনকর্মীরা গিয়ে তা পলিথিনে ঢেকে দেন।বনকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, পূর্ণবয়স্ক হাতির একাধিক কারণে মৃত্যু হতে পারে। বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে হাতির মৃত্যু হতে পারে, বার্ধক্যজনিত রোগে মৃত্যু হতে পারে, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হতে পারে, আবার অসুস্থতার কারণেও মৃত্যু হতে পারে। প্রাথমিকভাবে হাতিটির শুঁড়ে কিংবা দেহের অন্যত্র বিদ্যুতের শক লাগার কোনও চিহ্ন দেখতে পাননি স্থানীয়েরা। অনেকের ধারণা, রবিবার গভীর রাতেই হাতিটি মারা গিয়েছে। জঙ্গলে হাতির দেহ পড়ে থাকার খবর এ দিন সকালে ছড়িয়ে পড়ে শালবনির ওই এলাকায়। খবর পেয়ে উৎসাহী অনেকে চলে আসেন। কেউ মৃত হাতির কাছে ফুল রেখে যান, কেউ ধূপ জ্বালেন। অনেকেই প্রণাম করেন। সজল চোখে শেষ বিদায় জানানো হয় হাতিটিকে।