সামাজিক দূরত্ব না মেনে মৃত হাতি দেখার ভিড়। উঠল নিজস্বীও। শালবনির কদমাশোলে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
একটি অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীর মৃত্যু ঘিরে শোরগোল জঙ্গলমহলে। ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির ভীমপুরের কদমাশোলের। রবিবার সকালে এলাকার এক ভুট্টা খেতের উপরে হস্তিনীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়েরা। হাতির মৃত্যুর কারণ নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা রয়েছে।
এ দিন ময়নাতদন্তের পর পশু চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, ওই হস্তিনী অন্তঃস্বত্তা ছিল। দিন কয়েক পরেই তার প্রসব হত। গর্ভস্থ সন্তানেরও মৃত্যু হয়েছে। মেদিনীপুরের ডিএফও সন্দীপ বেরোয়াল বলেন, ‘‘শালবনির এক এলাকায় একটি পূর্ণবয়স্ক হস্তিনীর মৃত্যু হয়েছে।’’ মেদিনীপুরের এডিএফও পূরবী মাহাতো জানান, ভীমপুরের কদমাশোলে একটি হস্তিনীর মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তও হয়েছে। রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত সঠিক কারণ বলা সম্ভব নয়। এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে যান শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোও।
ভীমপুরের অদূরে দিন কয়েক ধরেই হাতির পাল ঘোরাঘুরি করছে। খাবারের খোঁজে রাতবিরেতে বিভিন্ন এলাকায় হানা দিচ্ছে। কয়েক দিন আগে পিঁড়াকাটার আমজোড়ে হাতির হানায় এক স্কুলছাত্রের মৃত্যুও হয়েছে। ভীমপুরের কদমাশোলে ভুট্টার খেত রয়েছে। এলাকার কয়েকজন চাষি এখানে ভুট্টার চাষ করেন। আশেপাশে লঙ্কার খেতও রয়েছে। এখন খেতে ফসল রয়েছে। ওই খেত থেকেই এ দিন সকালে ওই হস্তিনীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। বনকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, পূর্ণবয়স্ক হাতির একাধিক কারণে মৃত্যু হতে পারে। বিষক্রিয়াতেও মৃত্যুর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। প্রাথমিকভাবে হাতির শুঁড়ে বিদ্যুতের ‘শক’ লাগার কোনও চিহ্ন দেখতে পাননি স্থানীয়েরা। তবে কী ওই হাতিটি রোগে ভুগছিল? মেদিনীপুরের এক বন আধিকারিক বলেন, ‘‘কোনও হাতি অসুস্থ রয়েছে, এমন খবর আমাদের কাছে ছিল না।’’
প্রাথমিকভাবে বনকর্মীদের একাংশের অনুমান, হৃদযন্ত্র বিকল হয়েও মৃত্যু হতে পারে ওই হস্তিনীর। সকালে খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় উৎসাহী মানুষজন। কেউ মৃত হাতির কাছে ফুল রেখে যান, কেউ ধূপ জ্বেলে যান। প্রণাম করেন। এই মৃত্যু কি অস্বাভাবিক? এক বন আধিকারিক বলেন, ‘‘সেটা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই বলা সম্ভব হবে।’’