প্রতীকী ছবি।
সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বিজেপিকে ঠেকাতে কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন স্থগিত রেখেছে প্রশাসন। এমনই অভিযোগে সোমবার ঝাড়গ্রাম ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি-র নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যরা। যদিও জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, আইনশৃঙ্খলা জনিত কারণে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করা হয়েছে। পক্ষপাতের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
শালবনি, নেদাবহড়া, সর্ডিহা ও পাটাশিমূল এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ রয়েছে বিজেপি। এর মধ্যে বেশির ভাগ পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ রয়েছে গেরুয়া শিবির। গত ২৮ অগস্ট জামবনি ব্লকের দুবড়া অঞ্চলের তৃণমূল নেতা চন্দন ষড়ঙ্গীর গলার নলিকাটা দেহ মেলে ঝাড়গ্রাম শহরের অদূরে সত্যারডিহি এলাকায়। ওই দিনই ঝাড়গ্রাম ব্লকের এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের নির্ধারিত দিন ছিল। কিন্তু ওই দিনই চারটি পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন স্থগিত করে দেন জেলাশাসক।
বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, “তিন সপ্তাহের মধ্যে ওই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচনের সভার দিন ঘোষণা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল প্রশাসন। এখন এক মাস পেরিয়ে গেলেও বোর্ড গঠনের দিন ঘোষণা করা হচ্ছে না।”
সুখময়বাবুর অভিযোগ, ‘‘বিজেপি-র সংখ্যাগরিষ্ঠ পঞ্চায়েত গুলোকে অগণতান্ত্রিক ভাবে জোর করে প্রধান নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি স্থগিত করে রাখা হয়েছে। ওই সব পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, এ বার আমাদের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের অধিকার বুঝে নেবেন। দলীয়স্তরে এর বিরুদ্ধে জঙ্গলমহলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হচ্ছি।
অভিযোগ, এ দিন দুপুরে ঝাড়গ্রাম ব্লকের ওই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত বিজেপি সদস্যরা বিডিও-র সঙ্গে দেখা করার জন্য ঝাড়গ্রাম ব্লক অফিসে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। দরজার সামনে ব্যারিকেড করে বিজেপি-র পঞ্চায়েত সদস্যদের গতিরোধ করা হতেই তুমুল অশান্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার উপক্রম হতে বিজেপি-র দুই পঞ্চায়েত-প্রতিনিধিকে ডেকে পাঠান ঝাড়গ্রামের বিডিও অভিজ্ঞা চক্রবর্তী।
শালবনি গ্রাম পঞ্চায়েতের তুফান মাহাতো ও নেদাবহড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দেবেন্দ্র মাহাতো বিডিও-র সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন। এ দিন দুই প্রতিনিধিকে বিডিও জানিয়ে দেন, স্থগিত রাখার বিষয়টি তাঁর এক্তিয়ারে পড়ে না। বিজেপি সদস্যদের জেলা শাসকের দফতরে যোগাযোগ করতে বলেন বিডিও। বিডিও-র এমন কথায় ক্ষোভ ছড়ায় বাইরে। বিজেপি সদস্যরা ব্লক অফিসের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ ওঠে।
পরে বিজেপির নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে চার জনের এক প্রতিনিধি দল মহকুমাশাসক সুবর্ণ রায়ের সঙ্গে দেখা করেন। বিজেপি সদস্যরা প্রশ্ন তোলেন, দুবড়ার তৃণমূল নেতা খুন হওয়া সত্ত্বেও ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হয়েছে। তাহলে কেন সর্ডিহা, শালবনি, নেদাবহড়া ও পাটাশিমূলে প্রধান নির্বাচন হবে না?
সূত্রের খবর, মহকুমাশাসক তাঁদের জানিয়ে দেন, অনুকূল পরিস্থিতি না থাকায় ওই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। পরিস্থতির উন্নতি হলেই প্রধান নির্বাচন হবে।
জেলাশাসক আয়েষা রানি অবশ্য বলেন, “ওই পঞ্চায়েত গুলিতে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ পক্ষপাতের অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন।”