ব্লক অফিসের গুদামঘরই নয়া গ্রন্থাগার

সোমবার ঝাড়গ্রাম জেলার ব্লক অফিস প্রাঙ্গণে ‘জঙ্গলসাথী’ নামে এই গ্রন্থাগারের উদ্বোধন করবেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০১:১০
Share:

উদ্বোধনের অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র

একশো দিনের কাজে সাফল্যের জন্য মিলেছিল রাজ্যের পুরস্কার। তা দিয়ে ঝাঁ চকচকে গ্রন্থাগার তৈরি করল গোপীবল্লভপুর-১ ব্লক প্রশাসন। ডব্লিউবিসিএস-সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকার যুবক-যুবতীদের সাহায্য করতেই এই উদ্যোগ।

Advertisement

সোমবার ঝাড়গ্রাম জেলার ব্লক অফিস প্রাঙ্গণে ‘জঙ্গলসাথী’ নামে এই গ্রন্থাগারের উদ্বোধন করবেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। ভাবনাটা মূলত যাঁর, গোপীবল্লভপুর ১-এর বিডিও সেই বিশ্বনাথ চৌধুরী জানান, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কোচিং সেন্টার নেই। কাছাকাছি পড়ার জায়গা ৪২ কিলোমিটার দূরে ঝাড়গ্রামে বা ৮০ কিলোমিটার দূরে মেদিনীপুর শহরে। তাই গ্রন্থাগার গড়া। এখানে নিখরচায় ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার স্টাডি মেটিরিয়াল ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার বই মিলবে। দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকা, সাময়িকীর পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, বিজ্ঞান, সাহিত্য বিষয়ক বইও থাকবে।

এই এলাকার কর্মহীন যুবক-যুবতীরা প্রায়ই ব্লক অফিসে এসে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে খোঁজখবর নেন। বইপত্রের সমস্যার বিষয়টি বিডিওর নজরে এনেছিলেন তাঁরাই। বিশ্বনাথবাবু বলছিলেন, ‘‘যুবক-যুবতীদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দেওয়ার আগ্রহ ও চেষ্টা রয়েছে। কিন্তু প্রশিক্ষণ নেওয়া বা স্টাডি মেটিরিয়াল পাওয়া যায় না। কর্মপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়াবে এই গ্রন্থাগার।’’

Advertisement

একশো দিনের কাজে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের দশটি ব্লক পুরস্কৃত হয়েছিল। ওই তালিকায় ছিল গোপীবল্লভপুর-১ ব্লক। নেতাজি ইন্ডোরে পঞ্চায়েত সম্মেলনে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের হাত থেকে ১০ লক্ষ টাকার চেক ও শংসাপত্র নিয়েছিলেন বিডিও বিশ্বনাথবাবু। সেই পুরস্কারমূল্যের কিছুটা একশো দিনের কাজে খরচ করা হয়েছে। বাকি টাকায় তৈরি হয়েছে গ্রন্থাগার। ব্লক অফিস চত্বরে একটি পরিত্যক্ত গুদামকে সংস্কার করে আসবাবে সাজানো হয়েছে। রয়েছে বসে পড়ার ব্যবস্থা। আর সদস্যরা নিখরচায় স্টাডি মেটিরিয়াল ও বই নিতে পারবেন। বিশ্বনাথবাবু ও ব্লকের অন্য আধিকারিকরা মিলে তৈরি করেছেন ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার স্টাডি মেটিরিয়াল। ঠিক হয়েছে, শনি, রবিবার-সহ সপ্তাহে ৬ দিন খোলা থাকবে গ্রন্থাগার। বন্ধ থাকবে শুধু বৃহস্পতিবার।

এই উদ্যোগে কর্মপ্রার্থীরা খুশি। কলা বিভাগের স্নাতক হিরামণি মুর্মু, তৃতীয় বর্ষের কলেজ পড়ুয়া শিউলি মাহাতোরা বলছেন, ‘‘দূরে গিয়ে স্টাডি মেটিরিয়াল ও বই জোগাড়ের ঝঞ্ঝাট থেকে এ বার রেহাই মিলবে।’’ প্রশাসনের সব স্তরেও প্রসংশিত হয়েছে এই উদ্যোগ। ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক (সদর) নকুলচন্দ্র মাহাতো বলেন, “এর ফলে এলাকার কর্মপ্রার্থী যুবক-যুবতীরা উপকৃত হবেন।” ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সঞ্চিতা ঘোষেরও বক্তব্য, “এলাকাবাসীকে এমন গ্রন্থাগার উপহার দেওয়ায় ব্লক প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement