প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই নন্দীগ্রামে মনোনয়ন জমা দিল বিজেপি। শুক্রবার মনোনয়নের প্রথম দিনেই নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অধীন ১৬টি গ্রাম সংসদ আসনের ৫টিতে ও পঞ্চায়েত সমিতির তিনটি আসনের একটিতে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন পদ্ম-প্রার্থীরা। বিজেপির অভিযোগ, প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনায় এ দিন অনেকেই মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। তবে সোমবার এই পঞ্চায়েত এলাকার সব আসনে তাঁরা মনোনয়ন জমা দেবেন।
গত বিধানসভা নির্বাচনে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হারের পর থেকে নতুন করে চর্চায় রাজ্যের জমি আন্দোলনের আঁতুড় নন্দীগ্রাম। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই নির্বাচনী এলাকায় মনোনয়নের প্রথম দিনে বিজেপির এক কদম এগিয়ে যাওয়া নিয়ে তাই চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলছেন, "এটা বিয়েবাড়ি খাবার নয়, কে আগে খাবে আর কে পরে। এটা ভোট। সঠিক সময়ে তৃণমূলের তরফে মনোনয়ন জমা দেওয়া হবে।’’
এ দিন সকালে টেঙ্গুয়া থেকে মিছিল করে নন্দীগ্রামের জানকীনাথ মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রার্থীদের নিয়ে নন্দীগ্রাম ১ ব্লক অফিসের দিকে যাত্রা শুরু করে বিজেপি। ছিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা তথা তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক মেঘনাদ পাল। নিয়মমাফিক ব্লক অফিসের ১০০ মিটার দূরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। মেঘনাদের অভিযোগ, "নির্বাচন ঘোষণার পরও ব্লক প্রশাসন মনোনয়নপত্র জমার যথেষ্ট আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছে। আবেদনপত্রের ঘাটতি, কর্মীদের অদক্ষতা ইত্যাদির কারণে বেলা ৩টের মধ্যে কিছু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বাকি সোমবার জমা দেওয়া হবে। আর নন্দীগ্রামের বাকি এলাকাতেও মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত।"
গত ২৩ মার্চ এই হরিপুর পঞ্চায়েতেই প্রথম প্রার্থী ঘোষণা করে জেলা বিজেপি। দলে প্রশ্নও ওঠে। বিজেপির বিক্ষুব্ধ অংশের দাবি ছিল, পুরনো কর্মীদের বঞ্চিত করার লক্ষ্যেই তড়িঘড়ি ওই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। এ দিন যদিও সেই তালিকা ধরেই মনোনয়ন জমা হয়েছে।
২০২১ বিধানসভা ভোটে এই হরিপুর এলাকায় ৩,৭০০ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন মমতা। তবে তৃণমূলের দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব জোয়ার যাত্রায় বিপুল জনসমাগম বুঝিয়ে দিয়েছে যে নন্দীগ্রামের জনতা ফের ঘাসফুলেই আস্থা রাখছেন। যদিও বিজেপির দাবি, নব জোয়ারে বাইরে থেকে লোক এনেছিল তৃণমূল। নন্দীগ্রাম শুভেন্দুর সঙ্গেই রয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির দাবি, নন্দীগ্রামে প্রায় ৮০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দেবে বামেরা।
প্রথম দিনে পটাশপুর-১ ব্লকেও মনোনয়ন দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। এ দিন সকাল সাড়ে ন’টা থেকে বিজেপির লোকজন পঞ্চায়েত সমিতির অফিস চত্বরে ভিড় করেন। বেলা ১২টা থেকে মনোনয়নপত্র তোলা শুরু হয়। দুপুর দেড়টা থেকে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া চলে। পটাশপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির অধীন ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে বড়হাট অঞ্চল ছাড়া ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ৭৩টি আসনে বিজেপি প্রার্থীরা এ দিন মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে পঞ্চায়েত সমিতির ১০জন ও গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬৩জন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছেন। কোলাঘাটেও বিজেপি ৪টি মনোনয়ন পত্র তুলেছে।