প্রতীকী ছবি।
বিজেপিতে যাওয়ার পরে জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর প্রথম জনসভা জমেনি। তাই জেলায় দ্বিতীয় সভায় লোক ভরাতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। কিন্তু তাতেও হোঁচট খেতে হচ্ছে বলে খবর।
বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী ২৪ জানুয়ারি দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে ঝাড়গ্রাম শহরে রোড শো করবেন শুভেন্দু। জামদা সার্কাস ময়দানে হবে যোগদান মেলা। সেই সভায় লোক টানতেই হিমশিম গেরুয়া শিবির। প্রথমত, মকর পরব উপলক্ষে চলতি মাস জুড়ে গ্রামেগঞ্জে উৎসবের মেজাজ। দ্বিতীয়ত, শুভেন্দুর সভায় লোক নিয়ে যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বিজেপি কর্মীদের একাংশ।
পদ্ম-পতাকা হাতে নেওয়ার পরে গত ৩ জানুয়ারি শুভেন্দুর প্রথম প্রকাশ্য সভা ছিল দিলীপের খাসতালুকে। ওই দিন বেলিয়াবেড়ার মহাপালে দিলীপ ও শুভেন্দু একসঙ্গে থাকলেও লোক হয়নি। যে ৬৫ জন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তার মধ্যে শুভেন্দু-অনুগামীরা ছাড়া তৃণমূল শিবির থেকে আসা উল্লেখযোগ্য কেউ ছিলেনও না। বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা ছিল, শুভেন্দুর অন্য কর্মসূচি থাকায় মহাপালের সভা এক ঘন্টা এগিয়ে আনা হয়। তাই মাঝপথে লোকজন ভর্তি বহু গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে ওই সভা নিয়ে বিজেপির স্থানীয় নেতারা দলের অন্দরে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন বলে খবর। তাই আগামী সভায় ব্যাপক জমায়েতের চেষ্টা হচ্ছে।
জেলা বিজেপির সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘আগামী ২৪ জানুয়ারি ঝাড়গ্রাম শহরে দিলীপদা ও শুভেন্দুদা রোড শো করবেন। তারপরে শহরের জামদা সার্কাস ময়দানে যোগদান মেলায় তাঁরা সভাও করবেন।’’ সে দিন কি তৃণমূল শিবির ভেঙে উল্লেখযোগ্য কেউ যোগ দিচ্ছেন? সুখময় আগাম খোলসা করতে চাননি। শুধু বলেছেন, ‘‘অনেকেই বিজেপিতে যোগ দেবেন।’’
গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে এখনও তাঁর অনুগামীরা সক্রিয়। অনুগামীদের একাংশ বিজেপিতে গেলেও সমান্তরাল ভাবে ব্যক্তি শুভেন্দুর প্রচার করে চলেছেন। এ নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ বিরক্ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘নেতাই দিবসেও অনুগামী পরিবৃত্ত হয়ে শুভেন্দু গিয়েছিলেন। মকর পরব উপলক্ষে শুভেন্দুর ছবি দেখিয়ে দরিদ্রদের পোশাক বিলি করেছেন অনুগামীরা। সে ক্ষেত্রে শুভেন্দুকে জননেতা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন তাঁর অনুগামীরা, বিজেপি নেতা হিসেবে নয়। এমন সব কার্যকলাপে নিচুতলায় কর্মীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।’’
এই অবস্থায় শুভেন্দুর আগামী সভায় মেরেকেটে হাজার দশেক লোক ভরাতেই কালঘাম ছুটছে তাঁদের। বিজেপি সূত্রের খবর, জেলায় সাংগঠনিক বুথের সংখ্যা ১০৮৬টি। সম্প্রতি দলের এক সাংগঠনিক বৈঠকে প্রতি বুথ থেকে কমপক্ষে ৫০ জনকে শুভেন্দু-দিলীপের সভায় নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলার ১৮টি মণ্ডলের দলীয় নেতাদের নির্দেশ দেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। বিজেপি শিবিরের আশা, প্রতি বুথ থেকে দশ জন করে এলেও হাজার দশেক জমায়েত করা যাবে।
সুখময় অবশ্য বলছেন, ‘‘সভায় আসার জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্তের নেতা-কর্মীরা উদগ্রীব। তবে লোকজন আনতে হলে যানবাহনের খরচও রয়েছে। তাই মাঠ অনুযায়ী ভাল লোকই আনার পরিকল্পনা হয়েছে।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতোর পাল্টা দাবি, ‘‘শুভেন্দুর আগামী সভাও ফ্লপ হবে। জঙ্গলমহলের মানুষ বিশ্বাসঘাতককে পছন্দ করছেন না।’’