প্রতীকী ছবি।
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির প্রচারে নেমেছে তৃণমূল। স্বাস্থ্যসাথী, একশো দিনের কাজের জব কার্ড, কন্যাশ্রী সহ বিভিন্ন প্রকল্পে আবেদনের জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েত অফিসে শিবির করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। দলের নেতৃত্বরা ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির প্রচারে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে যা শাসকদলের অন্যতম প্রচারের কৌশল হিসেবে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পাল্টা প্রচারে নেমেছে বিজেপিও।
ইতিমধ্যেই ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচি শুরু করেছে তারা। এ বার তারই অঙ্গ হিসেবে বেকার যুবক-যুবতীদের কাছে টানতে প্রতিটি জেলায় কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া সহ তাঁদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কর্মসূচি নিল রাজ্য বিজেপি। রবিবার থেকে প্রতিটি জেলায় বিজেপির এই কর্মসূচির সূচনা হয়েছে। এদিন পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েক, যুব মোর্চার রাজ্য নেতা তথা জেলা পর্যবেক্ষক পিন্টু পাড়ই ও যুব মোর্চার জেলা সভাপতি প্রতীক পাখিরা সাংবাদিক বৈঠক করে এই নতুন কর্মসূচি জানান। এক সময় পিটিটিআই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া পিন্টু পাড়ই এখন বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য নেতা।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে পিন্টু বলেন, ‘‘রাজ্যে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ‘টেট’ পরীক্ষায় এতটাই দুর্নীতি হয়েছে যে উচ্চ আদালত নিয়োগের প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। কেন প্যানেল বাতিল হল তার কৈফিয়ত মুখ্যমন্ত্রীকে দিতে হবে।’’ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে ১৬ হাজার ৫০০ ‘টেট’ উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিতদের নিয়োগ করবেন বলে জানানো হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চাই ১৬ হাজার ৫০০ জন কোথায় নিয়োগ হতে বাকি আছে। আমরা এই নিয়ে সিবিআই তদন্ত চাইছি। সাতশোর বেশি টেট উত্তীর্ণ দেখাতে পারবেন না বলে আমি চ্যালেঞ্জ করছি। প্রয়োজনে আমার বিরুদ্ধে মামলা করুক।’’ তিনি বলেন, ‘‘কর্মসংস্থানের দাবিতে আমরা এর আগে নবান্ন অভিযান করেছি। বিকাশ ভবন অভিযান করেছি। এ বার যুব মোর্চার তরফে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যেতে বাধ্য হব।’’ বিজেপির তরফে ‘চাকরির প্রতিশ্রুতি কার্ড’ দেখিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘আমরা প্রতিটি বুথে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বেকার যুবক-যুবতীদের ফর্ম ফিলাপ করব। আমাদের কাছে তথ্য আসবে। সেই তথ্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠাব। আগামী দিনে রাজ্যে আমরা যখন সরকার গঠন করব এই প্রতিশ্রুতিমত এগোব। যাতে প্রকৃত মেধা সম্পন্ন বেকারদের চাকরির ব্যবস্থা হয়।’’
নবারুণ বলেন, ‘‘বাংলায় বেকারত্ব বাড়ছে। চাকরি না হওয়ায় বহু শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী হতাশায় ভুগছেন। আমরা বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা জানাতে তাঁদের তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচি পালনে নেমেছি।’’
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যের শাসকদলের নেতা-কর্মীরা যে ভাবে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির প্রচারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে চাইছেন, তারই পাল্টা হিসেবে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফর্ম ফিলাপ করে বেকার যুবক-যুবতীদের কাছে পৌঁছতে চাইছে বিজেপি।