ব্যাট হাতে ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক। বললেন, ‘‘১০ বছর পর ব্যাট হাতে বাইশ গজে নামলাম।’’ —নিজস্ব চিত্র।
রাজনীতির ময়দানে তারা যুযুধান প্রতিপক্ষ। তবে বাইশ গজে অন্য ভাবে ধরা দিল তৃণমূল এবং বিজেপি। তারকা সাংসদ দেবের ঘাটালে ব্যাট হাতে দেখা গেল বিজেপি বিধায়ককে। বল করলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি। রাজনৈতিক বৈরিতা ভুলে খেলার ময়দানে মিশে গেল রাজ্য রাজনীতির দুই প্রবল প্রতিপক্ষ। নজির তৈরি হল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের দাসপুরে। দেবের বার্তার পর এই রাজনৈতিক ‘মিত্রতা’?
দিন কয়েক আগে ঘাটালে রাজনৈতিক খেয়াখেয়ি ভুলে সবাইকে মিলেমিশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন সাংসদ দেব। বলেছিলেন, ‘‘আমি মিঠুন’দা বাবা-ছেলের মতো থাকতে পারলে তৃণমূল-বিজেপিতে হানাহানি কেন?’’ তাঁর দলের নিচুতলার নেতাকর্মীরা যাতে কোন্দলে না জড়ান, সেই বার্তা দেন তৃণমূল সাংসদ। শনিবার যেন তার প্রতিফলন দেখা গেল দাসপুরের রাজনগরে। একটি স্থানীয় ক্লাব আয়োজিত ক্রিকেট টুর্নামেন্টে এক সঙ্গে দেখা গেল ঘাটালের বিধায়ক শীতল কপাট এবং তৃণমূল পরিচালিত দাসপুরের ১ নম্বর পঞ্চায়েতের সহ-সভাপতি অনিল দোলইকে।
১৪ জানুয়ারি, শনিবার রাতে জমজমাট ছিল রাজনগরের ক্লাব আয়োজিত ‘ফ্রিডম কাপ ২০২৩’। মোট ৮টি দল এই খেলায় অংশ নিয়েছিল। সেই খেলার উদ্বোধন পর্বে বল করতে দেখা গেল তৃণমূলের অনিলকে। এবং ব্যাট করলেন বিজেপি বিধায়ক শীতল। শুধু তাই নয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফিতে কাটা থেকে বসে খেলা দেখা, সবই এক সঙ্গে এবং পাশাপাশি থেকে করলেন তাঁরা। বস্তুত, গত ২ বছরের মধ্যে এই প্রথম বার ঘাটালের বিধায়কের সঙ্গে কোনও তৃণমূল নেতাকে দেখা গেল একই অনুষ্ঠানে।
রবিবার বিজেপি বিধায়ক শীতল বলেন, ‘‘আমরা জনপ্রতিনিধি। সাধারণ মানুষের স্বার্থেই আমাদের কাজ। অনিলবাবুর (তৃণমূল নেতা) ছোড়া বলে ব্যাট করে মজাই পেয়েছি। ১০ বছর পর আবার ব্যাট হাতে বাইশ গজে নেমেছিলাম। আনন্দ পেয়েছি।’’ তৃণমূল নেতার সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’
ক্লাবের সম্পাদক স্বপন দিয়ানের কথায়, ‘‘১৪ জানুয়ারি শনিবার রাতে ৮ দলীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সূচনা করেছেন ঘাটালের বিধায়ক। তিনি ছিলেন ব্যাট হাতে। তাঁকে বল করেন দাসপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনিল দোলই। অনিলবাবুর দু’টি বল নিপুণ হাতে ‘ডিফেন্স’ করেন শীতলবাবু।’’
শনিবার রাত তখন প্রায় ৩টে। ফাইনালে ঘাটাল একাদশকে ১৫ রানে হারিয়ে ট্রফি জিতে নেয় বেলতলা একাদশ।