শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
কয়েক মাস আগে লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি আসনেই পদ্ম ফুটেছিল। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিজের জেলায় এই সাফল্য ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান ধাক্কা খেল শুভেন্দু গড়ে।
গত ২৭ অক্টোবর থেকে রাজ্যজুড়ে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ও কাঁথি, দুই সাংগঠনিক জেলাতেই অভিযানে আশানুরূপ অগ্রগতি হচ্ছিল না। আজ, রবিবার সদস্য সংগ্রহ অভিযানের শেষ দিন। দেখা যাচ্ছে, জেলা জুড়ে লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি বিজেপি। তমলুক ও কাঁথি, দুই সাংগঠনিক জেলাতেই তিন লক্ষ করে নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু অর্ধেকও পূরণ হয়নি। বিজেপির দলীয় সূত্রে খবর, ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত তমলুক সাংগঠনিক জেলায় সদস্য সংগ্রহ হয়েছে ৯৮,২৮৩ জন। আর কাঁথিতে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সদস্য সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৯৫ হাজার। যা লক্ষ্যমাত্রার এক তৃতীয়াংশ মাত্র। রবিবার সদস্য সংগ্রহ অভিযানের শেষ দিনে বিজেপির জেলা ও মণ্ডল নেতৃত্ব পথে নামবেন। তবে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের ভোটগ্রহণ ও গণনা। ফলে, সেই ব্যস্ততার মধ্যে শেষ দিনে বিশেষ সদস্য সংগ্রহ অভিযানে কেমন সাড়া মিলবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত তমলুক সাংগঠনিক জেলা প্রমুখ তথা জেলাপরিষদের বিরোধী দলনেতা বামদেব গুছাইত মানছেন,‘‘সদস্য সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা থেকে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। তবে অন্য সাংগঠনিক জেলাগুলির তুলনায় আমাদের অবস্থা ভাল। দলের সব নেতৃত্ব-কর্মীরা যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’’ বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডলও বলেন,‘‘দলের নেতা-কর্মীরা সমবায় ব্যাঙ্কের ভোটে সাহায্য করার পাশাপাশি সদস্য সংগ্রহ অভিযানও চালাবেন।’’
সদস্য সংগ্রহ অভিযানে আশানুরূপ সাড়া না মেলায় উৎসাহ দিতে শুভেন্দু নিজেও পথে নেমেছিলেন। বৈঠক করেছেন। গত লোকসভা ভোটে যে সব বুথে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে, সেখানে কমপক্ষে দু’শো সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। আর পিছিয়ে থাকা বুথে কমপক্ষে একশো জনের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। দলের নেতা-কর্মীদেরও লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট ছিল। কমপক্ষে একশো সদস্য সংগ্রহ করতে পারলে ‘সক্রিয় সদস্যে’র স্বীকৃতি মিলবে বলা হয়েছিল।
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলায় মোট ১৯২৮টি বুথ রয়েছে। কিন্তু বহু বুথেই সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। অন্য দিকে, কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় মোট ১৮৭৬টি বুথের মধ্যে লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ১২০০ বুথে এগিয়েছিল বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, দেড় হাজারের বেশি বুথে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নেমেছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ২৫৬টি অভিযান শুরু করা যায়নি। আর বাকি সব বুথ মিলিয়ে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক লক্ষের গণ্ডি পেরোয়নি।
তৃণমূলের কটাক্ষ, বিজেপির স্বরূপ মানুষ বুঝে গিয়েছেন।