বক্তব্য রাখছেন বিজেপি নেতা তথাগত রায়।
উচ্চ মাধ্যমিক শেষ না হওয়ায় মাইক ব্যবহারের অনুমতি মেলেনি। সোমবার সন্ধ্যায় তাই রাজ্য নেতা তথাগত রায়ের উপস্থিতিতে ছোট মাইক দিয়েই রেলশহরে পুরভোটের প্রচার শুরু করল বিজেপি।
এ দিন শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির একটি দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনের পাশাপাশি ওই ওয়ার্ডে দলের প্রার্থী পারুল চৌধুরীর সমর্থনে প্রচার করেন তথাগতবাবু। একযোগে সিপিএম ও তৃণমূলকে বিঁধে তিনি বলেন, “খুব কঠিন অবস্থায় চলছি। অগণতান্ত্রিক উপায়ে মারধর চলছে। পুলিশ-প্রশাসনকে অপব্যবহার করা হচ্ছে। যা সিপিএমের আমলে দেখেছি তাই এখন তৃণমূলের শাসনে দেখছি। সিপিএম টিকতে পারেনি। তৃণমূলেরও পরাজয় হবে।” এ দিনের প্রচারে অবশ্য খড়্গপুর পুরসভায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের উদ্দেশে একটি বাক্যও ব্যয় করেননি তিনি।
মিশ্রভাষাভাষির শহর খড়্গপুরে বরাবর বিজেপির প্রভাব ছিল। শেষ পুরসভা নির্বাচনেও একটি আসন দখল করেছিল বিজেপি। আর গত লোকসভা নির্বাচনে তো খড়্গপুর বিধানসভায় সর্বাধিক ভোট পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। এ বার তাই পুরভোটে রেলশহরে ভাল ফলের আশায় রয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও রাজ্যের বিগত ও বর্তমান শাসক দলের সমালোচনা শোনা গিয়েছে রাজ্যের এই বিজেপি নেতার গলায়। এ দিন দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তথাগতবাবু বলেন, “আপনারা ভয় পাবেন না। সিপিএম এত খুন করেছিল, পুলিশকে অপব্যবহার করেছিল। কিন্তু সিপিএম কি টিকেছে? তেমনই তৃণমূলও পশ্চিমবঙ্গ থেকে মুছে যাবে।” সারদা কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, “তৃণমূলের সব কুকীর্তি ফাঁস হবে। এখনও সে ভাবে দিদির কুকীর্তি বের হয়নি। শুধুমাত্র ডেলো পাহাড়ের বৈঠক সামনে এসেছে। এই বৈঠক ধীরে ধীরে বড় আকারে দেখা দেবে।”
এই শহরের পুরসভায় যাতে কোনও ভাবে তৃণমূল জায়গা করতে না পারে, এ দিন সেই আবেদন জানিয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগতবাবু। এ দিন সুন্দরবনে পিয়ালি গেস্ট হাউজে ডাকাতদের হানারও সমালোচনা করেছেন তিনি। অবশ্য এই অসামাজিক কাজকর্মের জন্য তিনি কর্মহীনতাকেই দায়ী করেছেন। তাঁর কথায়, “পশ্চিমবঙ্গে কোনও লগ্নি আসছে না। আর লগ্নি না এলে বেকারত্ব বাড়বে। কিন্তু যুব সম্প্রদায়ের এই সর্বনাশ আমরা দেখব না। আমাদের লড়াই চলবে।” সেই লড়াইয়ের স্বার্থেই পুর নির্বাচনে বিজেপিকে জয়যুক্ত করার আবেদন জানান তথাগতবাবু।
তবে পুরভোটে বিজেপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে দলীয় কর্মীদের একাংশের অসন্তোষ ধরা দিয়েছে। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ, কুশপুতুল পোড়ানোও হয়েছে। এই নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ দিন তথাগতবাবু বলেন, “আমাদের তুলনায় তৃণমূলের কোন্দল অনেক বেশি। সেখানে মারামারি হচ্ছে, গুলি চলছে। এ সব আমাদের হয়নি। যে সমস্যা হয়েছে তা কেটে যাবে।” এ দিন দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, জেলা কমিটির সদস্য অরূপ দাস প্রমুখ।