পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রের দলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিজেপি’র স্থানীয় নেতা–কর্মীদের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছিল আগেই। এ বার প্রচারে যাওয়া বিজেপি প্রার্থীকে আটকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে দলেরই একাংশ কর্মীর বিরুদ্ধে। নন্দকুমার বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন অধিকারী-সহ দলের চার নেতা রবিবার সন্ধ্যায় গাড়িতে চেপে প্রচারের যাওয়ার পথে ভবানীপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে দলেরই ১০-১২ জন কর্মী তাঁদের আটকে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। সোমবার এ নিয়ে নন্দকুমার থানায় ওই দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। নন্দকুমার থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১৬ টি বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই কয়েকটি আসনে প্রার্থী বদলের দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ। জেলা বিজেপি নেতাদের সামনে দলীয় অফিসে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। বিক্ষোভের ঘটনায় বিজেপি’র গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে আসে। নন্দকুমার বিধানসভা কেন্দ্রে ঘোষিত বিজেপি প্রার্থী তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন অধিকারীর প্রার্থী পদ নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ। যদিও ওই বিধানসভা আসনে প্রার্থী বদল হয়নি।
গত রবিবার সন্ধ্যেয় নীলাঞ্জনবাবু সহ দলের জেলা কমিটির সদস্য প্রসূন মিশ্র, দলের ব্লক সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মাইতিরা গাড়িতে চেপে নন্দকুমার হাইরোড থেকে নরঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন। ভবানীপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে ১০-১২ জন বিজেপি কর্মী তাঁদের গাড়ি আটক করে। দু’পক্ষের মধ্যে বচসার মাঝেই নীলাঞ্জনবাবু-সহ তাঁর সঙ্গীদের ধাক্কাধাক্কি করে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়। নীলাঞ্জনবাবুর সঙ্গে থাকা দলের জেলা কমিটির সদস্য প্রসূন মিশ্র এনিয়ে সোমবার নন্দকুমার থানায় দলেরই কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার কথা স্বীকার করে নীলাঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘দলের স্থানীয় নেতা জিমুত মাইতির মদতে কয়েকজন এমন করেছে। এ বিষয়ে দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে জিমুতবাবু বলেন, ‘‘ইদিনের ঘটনার সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই। বিরোধীদলের লোকজনরাই এটা করেছে। দলের প্রার্থী হিসেবে নীলাঞ্জনবাবুর হয়ে আমরা একসঙ্গে লড়াই করব।’’ বিজেপি’র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি মলয় সিংহ বলেন, ‘‘নন্দকুমারে দলীয় প্রার্থীর প্রচার সামগ্রী বন্টন নিয়ে একটা ছোটট সমস্যা হয়েছিল, তা মিটে গিয়েছে। ওখানে দলীয় প্রার্থীকে হেনস্থার ঘটনার বিষয়ে জানা নেই।’’
এ দিকে জেলার তমলুক ও পশ্চিম পাঁশকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী বদল করা হয়েছে। তমলুক বিধানসভায় আগে ঘোষিত প্রার্থী বিশ্বনাথ দাসের বদলে নতুন প্রার্থী করা হয়েছে বিশ্বজিৎ দত্তকে। গতবছর পুরসভার ভোটে জিতে বিশ্বজিৎবাবু বর্তমানে তমলুক পুরসভার কাউন্সিলর রয়েছেন। আর পশ্চিম পাঁশকুড়া বিধানসভায় আগে ঘোষিত প্রার্থী বিষ্ণুপদ কুইতির বদলে প্রার্থী করা হয়েছে নারায়ণকিঙ্কর মিশ্রকে।