আবর্জনায় শংসাপত্র। নিজস্ব চিত্র
পুরসভার দফতরের কাছেই রাস্তার পাশের আবর্জনায় পড়ে রয়েছে গোছা গোছা জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র। যে শংসাপত্র পাওয়ার জন্য আমজনতাকে পুরসভার দরজায় দরজায় ঘুরতে হয়, সেই নথির এমন দশা দেখে কার্যত হতবাক তমলুক শহরবাসী। ওই ঘটনার জেরে সমালোচনার মুখে তমলুক পুরসভা।
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রের খবর, তমলুক পুরসভা অফিসের পাশে রয়েছে তমলুক-ঘাটাল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের প্রধান অফিস। রবিবার বিকেলে ওই ব্যাঙ্কের অফিস সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দা দেখতে পান, পাশে জলাশয়ের ধারে আবর্জনার স্তূপে প্রচুর জন্ম-মৃত্যু সংক্রান্ত শংসাপত্র পড়ে রয়েছে। সেগুলিতে পুরসভা কর্তৃপক্ষের সিল-স্বাক্ষরও রয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, নির্দিষ্টভাবে আবেদনের পরে তৈরি করা হয় জন্ম-মৃত্যু সংক্রান্ত শংসাপত্র। এরপর সেগুলি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এখন প্রশ্ন উঠেছে, ওই পদ্ধতি মানা হলে কীভাবে এত বিপুল সংখ্যক বাতিল হিসাবে পড়ে থাকল। আবেদনের পর শংসাপত্র না নিলেও নির্দিষ্ট মেয়াদ পার না হওয়া পর্যন্ত তা বাতিল হয় না। আর বাতিল হলেও সেই শংসাপত্র নষ্ট করার নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। শংসাপত্র বাতিল বলে অফিসের বাইরে আবর্জনা হিসাবে কীভাবে বাইরে ফেলে দেওয়া দেওয়া হল, তারই এখন উত্তর মিলছে না।
এদিকে, আবর্জনায় শংসাপত্র পড়ে কথা জানার পরেই ঘটনাস্থলে যান তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন এবং পুরসভার কর্মীরা। এর পরে পুরকর্মীদের একাংশ পুরসভার তৈরি ওই সব শংসাপত্র বাতিল হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেন ঘটনাকে লঘু করার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে আসার পরেই আমি এসেছি। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়। কীভাবে এখানে ওই সব শংসাপত্র এল এবং কারা ওই ঘটনায় জড়িত, তা জানতে তদন্ত করা হবে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তির ব্যবস্থা হবে।’’
বঙ্গীয় পুর আইন অনুসারে, পুরসভায় জন্ম-মৃত্যুর রেজিস্ট্রার হলেন উপ-পুরপ্রধান। শংসাপত্রগুলি বাতিল বলে দাবি করেছেন তিনিও। আর ওই ঘটনার দায় চাপিয়েছেন সাফাইকর্মীদের উপরে। উপ-পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ বলেন, ‘‘পুরসভার তৈরি ওই শংসাপত্রগুলি বিভিন্ন কারণে বাতিল করা হয়েছিল। তবে তা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নষ্ট করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সাফাই কর্মী ভুল করেই ওই সব শংসাপত্রগুলি ফেলে দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’