বীরসিংহ গ্রাম। উন্নয়ন পর্ষদ প্রাপ্তির পরে আশায় গ্রামবাসী। নিজস্ব চিত্র
ঘোষণা হয়েছিল এক বছর আগে।
এ বার মিলল স্বীকৃতি। বীরসিংহ পেল উন্নয়ন পর্ষদ। সিংহশিশুর দ্বিশত জন্মবার্ষিকীর সমাপ্তি অনুষ্ঠানের ঠিক মুখে।
গত বছরই উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছিল বীরসিংহ গ্রামে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকীর সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে ডেবরার এক প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের ঘোষণা করেন। আজ, শনিবার সরকারি ভাবে বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকীর সমাপ্তি অনুষ্ঠানের সূচনা হবে। তার আগে বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভায় পাশ হল বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের প্রস্তাব। এই খবরে বীরসিংহের পাশাপাশি খুশি ঘাটালও। কারণ, প্রশাসন সূত্রের খবর, ঘাটাল ওই উন্নয়ন পর্ষদের আওতায় আসতে পারে। প্রশাসনের এক শীর্ষস্তরের আধিকারিকের কথায়, “বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদ কাজ শুরু করলে শুধু এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়ন হবে এমনটা নয়। উন্নয়নের মাধ্যমেই ঘাটাল সহ পাশাপাশি এলাকার ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে। তাতে উপকৃত হবেন এলাকার বিভিন্ন স্তরের মানুষ।’’ পশ্চিমের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, “বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদ অনুমোদনের খবর শুনেছি। সরকারি নির্দেশ মত পদক্ষেপ করা হবে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ, শনিবার বীরসিংহ গ্রামে সমাপ্তি উৎসবের সূচনা হবে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন জেলাশাসক, মন্ত্রী- সহ পদস্থ আধিকারিকেরা। এই অনুষ্ঠানে ‘বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদ’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জানালেন, উন্নয়ন পর্ষদ এটি একটি স্বশাসিত সংস্থা। কাজ করার প্রচুর সুযোগ। ইচ্ছে করলে সেই এলাকা- সহ পাশাপাশি এলাকার রাস্তাঘাট, পরিকাঠামো উন্নয়নের সাথে কর্মসংস্থারের নানা সুযোগ তৈরি করা যায়। সেখানে স্থানীয়দের বেশি কাজের সুযোগ মিলবে। বিদ্যাসাগরের হাত ধরে পযর্টন শিল্পের উৎকর্ষও হবে। আধিকারিকদেরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের সঙ্গে ঘাটাল ব্লক-সহ লাগোয়া বহু এলাকা অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভবনা প্রবল। স্থানীয় ভাবে ব্লক, পুরসভা, পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদ যেমন কাজ করছে করবে। আলাদা ভাবে উন্নয়ন পর্ষদও নানা উন্নয়ন করবে। এতে দ্রুত সমৃদ্ধ হবে ঘাটাল-বীরসিংহ।
বীরসিংহের অনুন্নয়ন নিয়ে গত বছর গ্রামবাসীদের একাংশের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর গত এক বছরে কাজ হয়েছে অনেক। শুক্রবার বীরসিংহ গ্রাম কমিটির সম্পাদক অসীম মণ্ডল বলেন, “যা চেয়েছি,তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।” আর স্থানীয় তরুণ সঙ্ঘ ক্লাবের সভাপতি সুব্রত ঘোষ বলেন, “আমরা খুশি। তবে আমরা চাই, উন্নয়ন পর্ষদের অফিস বীরসিংহ থেকে নিয়ন্ত্রত হোক।’’ জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বিদ্যাসাগরের প্রতি কতটা শ্রদ্ধাশীল, এটা তার বড় প্রমাণ। যারা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে হইচই করে, তাদের বোঝা উচিত। রাজ্যের মানুষ সবই বুঝতে পারছেন।”
আজ,শনিবার সরকারি ভাবে পালিত হবে সমাপ্তি অনুষ্ঠান। মঞ্চ সহ যাবতীয় প্রস্তুতি তৈরি। আজ, ২৬ এবং ২৯ তারিখেও জন্মদিন পালিত হবে। সূচনা অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন সৌমেন মহাপাত্র, জেলা শাসক রশ্মি কমল সহ অন্যরা। জল্পনা ছিল, আলাদা ভাবে আসতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে সূত্রের খবর, তিনি যাচ্ছেন না। তবে আজ আসতে পারেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ। বিদ্যাসাগর স্মৃতি রক্ষা কমিটির সম্পাদক শক্তিপদ বেরা বলেন, “সমাপ্তি উৎসবকে ঘিরে এলাকাবাসীও খুব উৎসাহী।”