বিরবাহা হাঁসদা। ফাইল চিত্র।
আসন্ন ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সাঁওতালি সিনেমার বিশেষ বিভাগ রাখার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। উৎসব কমিটির সদস্য বন ও ক্রেতা সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদাকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে খবর। ফলে এ বার কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার সাঁওতাল সম্প্রদায়ের দর্শকেরা নিজেদের ভাষায় ছবি দেখার সুযোগ পেতে চলেছেন। সেই সঙ্গে এ বার চলচ্চিত্র উৎসবেও বিশেষ দায়িত্ব পেয়ে গুরুত্ব বাড়ছে বিরবাহার। আন্তর্জাতিক স্তরেও পরিচিতি ঘটতে চলেছে সাঁওতালি সিনেমার।
করোনার কারণে এ বছরের জানুয়ারিতে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব স্থগিত হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে ১ মে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্রের খবর, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, এ বার উৎসবে সাঁওতালি সিনেমার বিভাগও থাকুক। দিন কয়েক আগে নন্দনে উৎসব সংক্রান্ত এক বৈঠকে মন্ত্রী অরূপ রায় ‘নন্দন টু’তে সাঁওতালি সিনেমা প্রদর্শনের বিষয়ে রাজ্য সরকারের ভাবনার কথা জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, এ বিষয়ে শীঘ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। বিরবাহাকে সাঁওতালি চলচ্চিত্র বিভাগের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে বলে খবর। ওই বৈঠকে ছিলেন রাজ চক্রবর্তী, সন্দীপ রায়, গৌতম ঘোষ, জুন মালিয়া, সোহম চক্রবর্তী-সহ বাংলা সিনে-জগতের বিশিষ্টজনেরা। উৎসব কমিটির সদস্য হিসেবে বিরবাহা হাঁসদাও ওই বৈঠকে ছিলেন। বিরবাহা বলছেন, ‘‘এ বার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নন্দন টু’তে সাঁওতালি সিনেমার বিভাগ থাকবে বলে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রী অরূপবাবু বিষয়টি জানিয়েছেন।’’
সাঁওতালি সিনে-জগতে বিরবাহার বিশেষণ ‘মহানায়িকা’। সব মিলিয়ে ১৯টি সাঁওতালি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত টানা সাত বার অল ইন্ডিয়া সান্তালি ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশনের তরফে পেয়েছেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। তাঁর অভিনীত জনপ্রিয় ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে ‘পাটাবিঁধা’, ‘আদো আলম আঁসোআ’, ‘আলম রেজিঞ সাকোম সিঁন্দুর’, ‘জাঁয়োআই ওড়া বঙ্গাই চাপাড় কিদিঞ’, ‘আম বেগর’, ‘বারডু’, ‘ফুলমণি’। ২০১৯ সালের নভেম্বরে ২৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আঞ্চলিক ছবি হিসেবে ফুলমণি প্রদর্শিত হয়েছিল। পরিচালক গৌতম ঘোষ, রাজ চক্রবর্তীরা সে বার বিরবাহার অভিনয়েরও প্রশংসা করেছিলেন। গত বিধানসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রতীকে লড়ে জিতে প্রতিমন্ত্রী হন বিরবাহা। সাঁওতালি সিনেমার মহানায়িকাকে চলচ্চিত্র উৎসব কমিটির সদস্যও করা হয়েছে। বিরবাহা বলছেন, ‘‘মেদিনীপুরে সিনেমা হল ও খড়্গপুরে মাল্টিপ্লেক্স থাকলেও সেখানে সাঁওতালি সিনেমা প্রদর্শিত হয় না। সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’’ সেই সঙ্গে সাঁওতালি সিনেমায় লগ্নি করতে যাতে কলকাতার প্রযোজকরা আগ্রহী হন সে বিষয়েও চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী। ঝাড়গ্রামের লোকেশনে আরও বেশি করে ছবির দৃশ্যগ্রহণ হলে স্থানীয় পর্যটনশিল্প আরও চাঙ্গা হবে বলে মনে করছেন বিরবাহা।