পুরভোটের মনোনয়ন পেশের আগে বিজেপি কর্মীদের মোটর বাইক মিছিলে অবরুদ্ধ পথঘাট।
পুরভোটে তাদেরই সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা। সেই কংগ্রেস আর বিজেপি রেলশহরে একই দিনে মনোনয়ন দিল। মঙ্গলবার দুই দলের মোটর বাইক আর গাড়ির মিছিলে ভোগান্তিতে পড়লেন শহরবাসী। একই পথে আসা দুই শিবিরের বাইক মিছিলে বেলা ১২টা থেকে ১টা অবরুদ্ধ হয়ে রইল ট্রাফিক এলাকা।
খড়্গপুর মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে এ দিন ছিল উপচে পড়া ভিড়। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ২৪টি আসনের মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়। সোমবারই কংগ্রেস সমর্থিত বিকাশ মঞ্চের প্রার্থী মীরাদেবী শর্মা মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এ দিন বিজেপির পক্ষ থেকে ৩০টি আসনের মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়। ফর্ম পূরণে নানা জটিলতায় বাকি আসনগুলিতে আজ, বুধবার মনোনয়ন দেওয়া হবে বলেই জানিয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি। এ দিন সিপিআই ৬টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছে। মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “এ দিন ৫২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। আর ২১টি মনোনয়ন তুলেছেন প্রার্থীরা। নির্বিঘ্নেই গোটা প্রক্রিয়া মিটেছে।”
খড়্গপুরের রাস্তায় দাপাল কংগ্রেসের বাইক মিছিলও। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
খড়্গপুর শহরে কংগ্রেসের দাপট বরাবর বেশি। এই শহর থেকে দীর্ঘদিনের বিধায়ক বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা জ্ঞানসিংহ সোহন পাল। পুরসভাও রয়েছে কংগ্রেসের দখলে। এ বারও ভোট-যুদ্ধে বিদায়ী পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডেই কংগ্রেসের নেতা। এ দিন সকাল থেকেই মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের বিপরীতে গোলখুলি দুর্গামন্দিরে প্রার্থীদের সঙ্গে বসেছিলেন বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহন পাল। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়ে কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির সদস্য রবিশঙ্করবাবু বলেন, “আমরা এখনও পর্যন্ত একটি নির্দল সমেত ৩১টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছি। বহু উত্সাহী মানুষ প্রার্থীদের সঙ্গে এসেছেন। দলের পক্ষ থেকে মিছিল হয়নি।”
এ বার বাড়বাড়ন্ত হয়েছে বিজেপিরও। তাদের মনোনয়নেও এ দিন বহু যুব কর্মীকে পথে নামতে দেখা যায়। সকাল থেকেই ব্যস্ত ছিলেন জেলা বিজেপির সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, জেলা সাধারণ সম্পাদক বাবলু বরম, শহর সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝা। তুষারবাবু বলেন, “কিছু জটিলতায় ১১টি আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়া যায়নি। জয় নিয়ে আমরা নিশ্চিত। যে ভাবে মনোনয়নে যুবকরা আমাদের সমর্থনে পথে বেরিয়েছিলেন, তাতে আমদের আশা আরও বেড়েছে।” তবে এখনই কাউকে পুরপ্রধান পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরছে না গেরুয়া শিবির। যে একটি ওয়ার্ডে প্রার্থী ঘোষণা বাকি ছিল, এ দিন সেই ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থীর নাম জানিয়েছে বিজেপি। প্রার্থী হচ্ছেন সীমারানি দোলই। এ দিন শহরের নিউ সেটলমেন্ট, পোর্টারখুলি, কৌশল্যা, তালবাগিচা, রবীন্দ্রপল্লি, নিমপুরা, মথুরাকাটি এলাকায় বিজেপি-র বাইক মিছিল বেরোয়। শ্রীকৃষ্ণপুর, খরিদা, ওল্ড সেটলমেন্ট, মালঞ্চ, ইন্দা, ঝাপেটাপুরে ভিড় করেছিলেন কংগ্রেস সমর্থকেরা। সোমবার বামেদের মনোনয়নে বাইক মিছিল ছিল না। সিপিআইয়ের জেলা সহ-সম্পাদক বিপ্লব ভট্ট বলেন, “আমাদের মনোনয়নে যথেষ্ট ভিড় হয়েছিল। কিন্তু আমরা মনোনয়নের জন্য শহর অচল করার বিরোধী।”
pix