এ বার পঞ্চায়েত ভোটে মহিলা পরিচালিত কোনও ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। অথচ ভোটকর্মী হিসেবে অনেক শিক্ষিকা ও মহিলা সরকারি কর্মীদের পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ করে প্রশিক্ষণের জন্য চিঠি পাঠিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নির্বাচন দফতর। শুধু তাই নয় পুরুষ ভোটকর্মীদের সঙ্গে একই দলে তাঁদের যুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এর ফলে ওই সব শিক্ষিকা ও মহিলা সরকারি কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের চিঠি পেয়ে ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষিকা এবং মহিলা সরকারি কর্মী ভোটকর্মী হিসেবে প্রথম দফার প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফার প্রশিক্ষণ নিতে তাঁরা জানতে পারেন এবার মহিলা পরিচালিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হচ্ছে না। মহিলা ভোটকর্মীও নেওয়া হবে না। এর ফলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মহিলা ভোটকর্মী হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েও হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ। সমস্যার কথা স্বীকার করে জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক নিশান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও মহিলা পরিচালিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থাকছে না। কোনও মহিলা ভোটকর্মীও রাখা হচ্ছে না। যাঁরা এধরনের চিঠি পেয়েছেন সেটা ভোটকর্মীদের তালিকা তৈরিতে তথ্যগত ভুলের জন্যই হয়েছে। আমাদের কাছে কেউ এবিষয়ে জানালে ভোটকর্মীদের তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।’’
নির্বাচন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক গ্রামীণ চক্রের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সঙ্গীতা দাসকে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেকেন্ড পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগের চিঠি দেওয়া হয়। চিঠি পেয়ে সঙ্গীতাদেবী প্রথম দফার প্রশিক্ষণও নেন। গত ২মে সঙ্গীতাদেবী দ্বিতীয় দফার প্রশিক্ষণের চিঠি পেয়ে অবাক হয়ে যান। কারণ চিঠিতে উল্লিখিত পাঁচজন ভোটকর্মীর দলে একমাত্র মহিলা সদস্যা তিনি। সঙ্গীতাদেবীকে দ্বিতীয় দফার প্রশিক্ষণ নিতে ৬ মে ময়না ব্লকে যাওয়ার কথা জানানো হয়। ওই চিঠি নিয়ে রবিবার ময়না ব্লকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে তিনি জানতে পারেন মহিলা ভোটকর্মী নিয়োগ হবে না। তাই প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই।
রবিবার সঙ্গীতাদেবী বলেন, ‘‘সেকেন্ড পোলিং অফিসার হিসেবে দ্বিতীয় দফার প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে জানতে পারি মহিলা ভোটকর্মী নিয়োগ হবেনা। তাই ফিরে এসেছি।’’
শুধু সঙ্গীতাদেবী নয়, তমলুক গ্রামীণ চক্রের একটি স্কুলের পার্শ্বশিক্ষিকা পম্পা সামন্ত মণ্ডল ও মহিষাদল পশ্চিম চক্রের একটি স্কুলের পার্শ্বশিক্ষিকা রমা ঘোড়াই হাজরাও ভোটকর্মী হিসেবে নিয়োগের চিঠি পেয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, কমিশনের ভুলের জন্য অযথা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।