প্রতিবাদ: নয়াগ্রাম মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
মাথায় ব্যান্ডেজ। বুকে কালো ব্যাজ। হাতে স্টেথোস্কোপ। জরুরি বিভাগের মাটিতে বসে এই অবস্থাতেই বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা করলেন চিকিৎসকেরা।
শুক্রবার এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে নয়াগ্রাম মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। রাজ্যে চিকিৎসকদের উপর নিগ্রহের প্রতিবাদে নয়াগ্রামের সরকারি চিকিৎসকরা এ দিন কেউই আউটডোরে বসেননি। তবে চিকিৎসা পরিষেবা চালু রেখেই চলেছে প্রতিবাদ। গাঁধীগিরির পথে হাসপাতালের সুপার কৌশিক দাস, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সুশোভন ঘোষ, শিশু বিশেষজ্ঞ চয়ন চক্রবর্তী, সার্জেন রমেশচন্দ্র মুর্মু, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বিকাশচন্দ্র ঘোষের মতো চিকিৎসকরা এ দিন জরুরি বিভাগের মাটিতে বসে আউটডোরের পরিষেবা দেন। সুপার বলেন, ‘‘মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে জরুরি বিভাগের মাটিতে বসে রোগীদের সম্পূর্ণ পরিষেবা দিয়েছি। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা রোগী ও তাঁদের পরিজনদের বোঝানোও হয়। সবাই জানান, তাঁরা আমাদের পাশে আছেন।’’
এ দিন কয়েকশো রোগী আউটডোরে এসেছিলেন। আউটডোর বন্ধ থাকলেও প্রায় ছ’শো রোগীর নাম নথিভুক্ত করে জরুরি বিভাগে যেতে বলা হয়। ডিজিট্যাল এক্সরে, আল্ট্রা সোনোগ্রাফি, ইসিজি, রক্ত পরীক্ষার বিভাগগুলিও খোলা ছিল। রক্তদাতা দিবসে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের উদ্যোগে রক্তদান শিবিরও হয়েছে। ১২ জন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগীর পরিজন মিলিয়ে ৫৫ জন রক্ত দেন।
গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশ্যালিটিতে চিকিৎসকরা কালো ব্যাজ পরে আউটডোরের বাইরে চেয়ার-টেবিল পেতে সাড়ে পাঁচশো রোগীকে দেখেছেন। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্বাভাবিক ছিল আউটডোর। চিকিৎসকেরা এখানেও কালো ব্যাজ পরেছিলেন। তবে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার থেকে মাথায় ব্যান্ডেজ পরে ডিউটি করছেন। কয়েক বছর আগে এক রোগীর মৃত্যুর পরে পরিজনদের হাতে নিগৃহীত হন শুভেন্দু। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘পরিকাঠামো নেই। তারপর নিগৃহীত হতে হচ্ছে। এখন যা পরিস্থিতি হয়েছে, তাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তো আর চিকিৎসকই হতে চাইবে না। সুবিচারের দাবিতে ব্যান্ডেজ বেঁধে ডিউটি করছি এবং করব। এটাই আমার প্রতিবাদ।’’