—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP
সমীক্ষা শেষে আবাস প্রকল্পের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়েছে। গত মাস থেকে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্য। সব কিছুই হয়েছে দ্রুততার সঙ্গে। এবার পালা পাকা বাড়ি তৈরির। এই কাজের বাস্তবায়নে সমস্যায় পড়ছেন বহু উপভোক্তা। অধিকাংশেরই আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির নিয়মাবলী এবং নকশা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেই। অভিযোগ, এর ফলে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও শাসক নেতাদের বলা নিয়মের উপর ভিত্তি করে একাংশ উপকোক্তা বাড়ি তৈরি করছেন। কেউ পুরনো খুঁটি দেওয়া বাড়ির বেড়া সরিয়ে সেখানে কংক্রিটের ব্যান্ড দিয়ে ইটের দেওয়াল তুলছেন। কেউ আবার আবাসের টাকায় পুরনো বাড়ির পাশে আগাম রান্না ঘর তৈরি করছেন।
আবাস প্রকল্পে জেলার উপভোক্তাদের প্রথম দফায় ৬০ হাজার টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। এর পরে অনেকেই বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এই প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য ১৬ দফা নিয়ম, কাজের বিবরণ এবং খরচের সরকারি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তৈরি হওয়ায় বাড়িটি ২৬৯ বর্গক্ষেত্র ফুট হওয়া আবশ্যক।
এগরা মহকুমার বিভিন্ন পঞ্চায়েত প্রশাসনের দাবি, এই প্রকল্পে বাড়ি কোন নিয়মাবলীতে তৈরি করতে হবে, তা উপভোক্তাদের নিয়ে কোনও শিবির হয়নি। ফলে অনেকই উপভোক্তায় নিজের মতো করে বাড়ি তৈরির চেষ্টা করছেন। কোনও কোনও এলাকায় আবার অভিযোগ উঠছে, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধি এবং শাসক দলের নেতাদের নিজেদের মতো করে বাড়ি তৈরির পদ্ধতি উপভোক্তাদের জানাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপভোক্তা বলেন, ‘‘শাসক দলের পঞ্চায়েত প্রতিনিধি আমাকে পুরনো খুঁটি দেওয়া ঘরে ইটের দেওয়াল তুলে মেঝে ঢালাই দিতে বলেছেন। সেই মতো কাজ করছি।’’
সরকারি নিয়ম অনুসারে, উপভোক্তাদের মাটির নীচ থেকে কলাম তুলতে হবে। কলাম মাটির উপর উঠলে তার উপর কংক্রিটের ব্যান্ড তৈরি করতে হবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে উপভোক্তারা কলাম না তুলে তাদের কংক্রিটের খুঁটি দেওয়া বাড়ির বাঁশের দেওয়াল সরিয়ে দিয়ে সেই ঘরেই ইটের দেওয়াল তুলে ঢালাই করছেন। কেউ আবার খুঁটি দেওয়া কাঁচা ঘরে আবাসের টাকায় মেঝে ঢালাই করে দিয়েছেন।
এদিকে, সঠিক নিয়মে বাড়ি তৈরি না করলে আবাস প্রকল্পের পরবর্তী দফার টাকা পেতে উপভোক্তারা সমস্যায় পড়তে পারেন। প্রথম দফায় বাড়ির কাজ (ভিত থেকে লিন্টন পর্যন্ত তৈরি) হওয়ার পরে তা দেখে উপভোক্তাদের পরের দফার ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে এগরার মহকুমাশাসক মনজিৎ কুমার যাদব বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা মেনে আবাস প্রকল্পের বাড়ি তৈরি করতে হবে। বাড়ি তৈরির কাজ পরিদর্শনে থাকা কর্মীদের সঠিক তথ্য প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশ রয়েছে। নিয়ম বহির্ভূত বাড়ি তৈরি করলে বাকি টাকা দেওয়া হবে না।’’
বিভিন্ন পঞ্চায়েতে শাসক দলের একাংশ নেতৃত্ব নিজেদের মতো করে বাড়ি তৈরির যে উপায় বলছেন বলে অভিযোগ, তা মানলে উপভোক্তারাই বিপাকে পড়বেন। এ ব্যাপারে অবশ্য পটাশপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বপন মাইতি বলছেন, ‘‘বেশ কিছু জায়গায় স্থানীয় নেতৃত্বরা না বুঝে এই ভাবে উপভোক্তাদের বাড়ি বলতে বলছেন শুনেছি। কেউ অন্যের কথায় নিয়ম বহির্ভূত বাড়ি তৈরি করবেন না। তা হলে সমস্যায় পড়বেন।’’