মেদিনীপুর শহরের পাটনাবাজারে পাশাপাশি ঝুলছে বিভিন্ন দলের পতাকা। —নিজস্ব চিত্র।
রাত পোহালেই ভোট গণনা মেদিনীপুরে। প্রস্তুতি তুঙ্গে।
গত ১৩ নভেম্বর মেদিনীপুরে বিধানসভা উপনির্বাচন হয়েছে। কাল, ২৩ নভেম্বর, শনিবার গণনা। এই বিধানসভার ৩০৪টি বুথের মধ্যে ১৪৬টি গ্রামাঞ্চলের, আর ১৫৮টি শহরাঞ্চলের। সব ঠিক থাকলে, শুরুতে গ্রামাঞ্চলের গণনা হবে। তারপর শহরের। কমিশন সূত্রে খবর, বুথের ক্রমিক সংখ্যা অনুযায়ী গণনা হবে। ১ থেকে ১৪৬ নম্বর পর্যন্ত বুথ রয়েছে গ্রামাঞ্চলে। আর ১৪৭ থেকে ৩০৪ নম্বর পর্যন্ত বুথ শহরের।
বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি ছাড়া উপনির্বাচন মোটের উপর সুষ্ঠুভাবেই হয়েছিল। উপনির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার তথা মহকুমাশাসক (সদর) মধুমিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। গণনাও সুষ্ঠুভাবে হবে।’’ অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কড়া নিরাপত্তা থাকছে গণনাকেন্দ্রে, আশেপাশেও।
মেদিনীপুর বিধানসভার স্ট্রংরুম রয়েছে মেদিনীপুর কলেজ চত্বরে। কাল, শনিবার সকাল ৮টায় গণনা শুরু হওয়ার কথা। দু’-আড়াই ঘন্টা পরে ফলাফলের ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে। তবে একাধিক মহলের মত, কিছু পরে ‘খেলা’ ঘুরেও যেতে পারে। সকালে যে এগিয়ে ছিল, বেলায় সে পিছোতে পারে। উল্টোটাও হতে পারে। মেদিনীপুরে এমন সম্ভাবনা রয়েছেই। কারণ, শুরুতে গণনা হবে গ্রামের ভোট সেখানে তৃণমূলের ‘শক্ত ঘাঁটি’। এরপর গণনা হবে শহরাঞ্চলের, সেখানে আবার বিজেপির ‘প্রভাব’ রয়েছে।
কমিশন সূত্রে খবর, মেদিনীপুরে সর্বোচ্চ ১৭ রাউন্ড গণনা হওয়ার কথা। অনুমান, ফল পুরোপুরি প্রকাশ হতে দুপুর গড়াতে পারে। বিকেলও হতে পারে। জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর বিধানসভায় ইভিএমের ভোট গণনার জন্য সবমিলিয়ে টেবিল থাকার কথা ১৮টি। পোস্টাল ব্যালটের ভোট গণনার জন্য টেবিল থাকার কথা ২টি। সাধারণত, প্রথম রাউন্ডের গণনায় সময় খানিক বেশি লাগে, গড়ে ২৫-৩০ মিনিট মতো। পরের রাউন্ডগুলির গণনায় গড়ে ১৫-২০ মিনিট মতো লাগতে পারে। এই হিসেবে ১৭ রাউন্ড গণনার ক্ষেত্রে সময় লাগবে ন্যূনতম ৩০০ থেকে ৩৪০ মিনিট। অর্থাৎ, প্রায় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ ঘন্টা।
কমিশন সূত্রে খবর, কোনও ‘হোঁচট’ ছাড়াই গণনাযাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, সেই বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে গণনা পর্যবেক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে শমিত শর্মাকে। শমিত ২০০৪ ব্যাচের আইএএস, রাজস্থান ক্যাডারের। মেদিনীপুরের উপনির্বাচনে তিনিই সাধারণ পর্যবেক্ষক ছিলেন। গণনা পর্যবেক্ষক, রিটার্নিং অফিসার, প্রার্থী বা তাঁর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে স্ট্রংরুম খোলা হবে। তারপর গণনা শুরু হবে পোস্টাল ব্যালট দিয়ে। এখানে উপনির্বাচনে পাঁচ জন প্রার্থী। একাধিক মহলের মতে, লড়াই হয়েছে দ্বিমুখীই। তৃণমূল বনাম বিজেপি। বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাসের দাবি, ‘‘মানুষ মোদীজির উপরেই আস্থা রেখেছেন।’’ তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়ও বলেন, ‘‘বিপুল ভোটে জিতব।’’