লক্ষ্যে অবিচল মনিকা সরেন। — নিজস্ব চিত্র।
এ বার লক্ষ্য আরও বড়।
তাঁর কাঁধে এশিয়া কাপে তিরন্দাজিতে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার গুরুদায়িত্ব। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এশিয়া কাপে যোগ দিতে চিনে যাবেন নয়াগ্রামের মনিকা সরেন।
পরিবারের একফসলী জমির ধান বিক্রির টাকা দিয়ে ব্যাঙ্ককে গত এশিয়া কাপে যোগ দেন মনিকা। সে বার এশিয়া কাপের তিরন্দাজিতে দলগত বিভাগে ব্রোঞ্জ পেয়েছিল ভারত।
অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। ভাল সরঞ্জাম না থাকায় নিয়মিত অনুশীলন করতে পারতেন না তিনি। উন্নত মানের সরঞ্জামের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে মনিকা আবেদন জানান। গত বছর কলকাতার নজরুল মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনিকার হাতে আধুনিক মানের ‘বো সেট’ তুলে দেন। তারপর থেকে লক্ষ্যপূরণে কঠোর অনুশীলনের শুরু।
৩০ ও ৩১ জুলাই দু’দিন ব্যাপী হরিয়ানার রোহতকের রাজীব গাঁধী স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক প্রতিযোগিতায় যোগ দেন মনিকা। সহজেই চিনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন তিনি। এশিয়া কাপের তিরন্দাজি বিভাগে মনিকা ছাড়াও দেশের অন্যান্য রাজ্য থেকে আরও তিন জন মহিলা যোগ দেবেন। চিনের তাইপেই-তে এশিয়া কাপ আয়োজিত হবে আগামী ৭-১২ সেপ্টেম্বর।
সোমবার হরিয়ানা থেকে ফোনে মনিকা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া উন্নত মানের সরঞ্জামে অনুশীলন করে আমার নিজের উপর বিশ্বাস অনেক বেড়ে গিয়েছে। এশিয়া কাপে আরও ভাল ফল করার চেষ্টা করব।’’ মনিকার সাফল্যে খুশি তাঁর কোচ প্রকাশ গঙ্গাধর। তিনি বলেন, “আশা করছি, চিনের এশিয়া কাপে মনিকা ভাল ফল করবে।’’
‘পশ্চিমবঙ্গ আর্চারি অ্যাসোসিয়েশন’-র সম্পাদক রূপেশ কর বলেন, “মনিকা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।’’ খানিকটা ক্ষোভের সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘২০০৭ সালের পর কোনও সরকারি সাহায্য পাইনি। টাকার অভাবে প্রতিযোগীদের উন্নত মানের সরঞ্জাম দেওয়া সম্ভব হয় না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় ছেলেমেয়েদের নিয়ে যাওয়ার খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হয়। একটি ঘরের আবেদন করেও লাভ হয়নি।’’