—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লোকসভা ভোট দোরগোড়ায়। মোদী সরকারের শেষ বাজেটে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সব অঙ্গনওয়াড়ি ও আশা কর্মীদের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় আনার ঘোষণা করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রের ওই প্রকল্প এ রাজ্যে চালু হয়নি। এখানে রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। যদিও সেই কার্ডে উপযুক্ত পরিষেবা মেলে না বলে অভিযোগ।
অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কেন্দ্রের আয়ুষ্মান প্রকল্প। আয়ুষ্মান কার্ডে উপভোক্তারা বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমায় বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পান। রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথীতেও বছরে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকার বিনামূল্যে চিকিৎসা মেলে।
তবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় খুশি নন পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। তাঁরা চান সরকারি কর্মীর মর্যাদা, অনিয়মিত সাম্মানিকের পরিবর্তে মাসিক বেতন। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পিছু শিশু ও মায়েদের খাবারের বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিও রয়েছে।পশ্চিমবঙ্গ আইসিডিএস কর্মী ও সহায়িকা সমিতির ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক নিবেদিতা দাস বলছেন, ‘‘কেন্দ্র অথবা রাজ্য কোনও সরকারই আমাদের স্থায়ীকরণের বিষয়টি নিয়ে ভাবছে না। ফলে ভোটের টোপে আমরা ভুলছি না!’’ ওয়স্টবেঙ্গল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেল্পার্স ইউনিয়নের ঝাড়গ্রাম জেলা নেত্রী রেবা পাত্রের কথায়, ‘‘ন্যূনতম ভাতা না দিয়ে আয়ুষ্মান ভারতের অধীনে আনার ঘোষণা অন্তঃসারশূন্য।’’ রাজ্য আইসিডিএস কর্মী সমিতির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক শুক্লা ঘোষ আবার বলেন, "আগে বাস্তবায়ন হোক। অন্য রাজ্য যদি দেয়, তাহলে এই রাজ্যও দিতে বাধ্য হবে। না হলে আন্দোলনে নামব।’’
ঝাড়গ্রাম জেলায় অঙ্গনওয়াড়ি আছে ২,৪৭৭ টি। কর্মী ও সহায়িকা সাড়ে চার হাজার। প্রায় সাড়ে তিনশো পদ শূন্য থাকায় একজন কর্মীকে একাধিক কেন্দ্রের দায়িত্ব সামলাতে হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরে অঙ্গনওয়াড়ি রয়েছে ৬ হাজারের বেশি, কর্মী-সহায়িকা মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় ১২ হাজার। জেলার আইসিডিএস শাখা সংগঠনের জেলা নেত্রী মার্জনা সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘আমাদের যে টাকাটা কেন্দ্র দিত, সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। অন্য বিলও দিচ্ছে না। এখন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তি ভাল বলি কী করে!’’ পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ৪ হাজার আশাকর্মী আছেন। রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আশাকর্মী শাখার জেলা নেত্রী মল্লিকা মজুমদার বলেন, ‘‘আগে বাস্তবায়িত হোক তারপর বলা যাবে।’’ রাজ্য আশা স্বাস্থ্যকর্মী ইউনিয়নের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক ডালিয়া ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, ‘‘অনেক প্রকল্পই ঘোষণা হচ্ছে। অথচ সরকারি নির্দেশিকা কিছু নেই। সবই ভাঁওতা।’’