গত শুক্রবার অভিষেকের কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে। গ্রেফতার হন মোট ৯ জন। —ফাইল চিত্র।
সিআইডি নয়, সিবিআই তদন্ত চাইলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া কুড়মি নেতারা। সোমবার তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলা দায়রা আদালতের বিচারক।
সোমবার আদালত থেকে বেরিয়ে প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় ধৃত কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতো বলেন, ‘‘আবার শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করব আমরা। কিন্তু আমরা চাই, সিবিআই তদন্ত হোক। সিআইডি নয়। ন্যায়বিচার চাইছি।’’ পাশাপাশি তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ব্যাক্তিগত ভাবে ধন্যবাদ জানান তিনি।
গত শুক্রবার ঝাড়গ্রাম শহরে ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির ‘রোড শো’ শেষ করে লোধাশুলি হয়ে শালবনি যাওয়ার পথে অভিষেকের কনভয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে কুড়মিদের বিরুদ্ধে। সেই হামলায় অল্পবিস্তর জখম হন রাজ্যের মন্ত্রী তথা আদিবাসী নেত্রী বিরবাহা হাঁসদা। এই হামলার ঘটনায় কুড়মিদের ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছিলেন অভিষেক এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও এই হামলার ঘটনায় কুড়মি নেতা রাজেশ-সহ মোট ১৫ জন বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। পুলিশ এদের মধ্যে ‘কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গে’র সভাপতি রাজেশ এবং আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজি মাহাতো-সহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। তা ছাড়া হামলার ৪৮ ঘণ্টার মাথায় তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে সিআইডি। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিন্হা বলেন, “কনভয়ে হামলার ঘটনার তদন্তের দায়িত্বভার সিআইডি নিয়েছে।”
সোমবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হয় ধৃতদের। তাঁদের মধ্যে রাজেশ বলেন, ‘‘আমাদের আইনের প্রতি বিশ্বাস আছে। ন্যায়বিচার চাইছি। সিবিআই তদন্ত হোক। সত্য সামনে আসুক। আমরা এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কোনও হিংসাকে আমরা সমর্থন করি না। আমাদের এই সমাজ আন্দোলন ৭৩ বছর সাংবিধানিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ লড়াই। এই লড়াই চলতে থাকবে। শুধু আমাদের আন্দোলনকে দমনই নয়, আমাদের জাতিকে শেষ করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে।’’ রাজেশের স্ত্রী মিতা মাহাতোও আদালতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘সিবিআই তদন্তের দাবি করছি। সত্যের জয় হোক। সমাজের আন্দোলন যেমন চলছে তেমন চলবে।’’ তিনি জানান, গ্রেফতারের পর আর স্বামীর সঙ্গে কথা হয়নি।