শিক্ষানবিশ হিসেবে হাতেকলমে কাজ শেখার সুযোগ। প্রতীকী চিত্র।
কাজ খুঁজতে কিংবা শিক্ষানবিশের শংসাপত্র জোগাড়ের জন্য বিভিন্ন কোম্পানির দরজায় আর ঘুরতে হবে না! আইটিআই উত্তীর্ণ তরুণ-তরুণীদের শিক্ষানবিশ হিসেবে হাতেকলমে কাজ শেখার সুযোগ দিতে বিভিন্ন শিল্প ও প্রযুক্তি সংস্থা হাজির হচ্ছে আইটিআইয়ের দুয়ারেই।
আগামী ১০ এপ্রিল সোমবার বেলপাহাড়ির সাহাড়ি এলাকায় বিনপুর ২ গর্ভমেন্ট আইটিআই চত্বরে একদিনের ‘অ্যাপ্রেন্টিসশিপ ফেয়ার’ বা শিক্ষানবিশ মেলার আয়োজন করা হবে। রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল ফর ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাপনায় হবে ওই শিক্ষানবিশ মেলা। সেখানে অবশ্য জেলা তথা রাজ্যের যে কোনও আইটিআই উত্তীর্ণরা ক্যাম্পাসিংয়ে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
বেলপাহাড়ির সরকারি আইটিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৌভিক পাল জানাচ্ছেন, মেলায় শিক্ষানবিশ থেকে স্থায়ী কাজের সুযোগ মিলতে পারে। জেলা ও রাজ্যের প্রায় ১০টি শিল্প ও প্রযুক্তি সংস্থার প্রতিনিধিরা ওই দিন আসবেন। সেখানে ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে সংস্থাগুলি শিক্ষানবিশদের বাছাই করবেন।
শিক্ষানবিশ পর্বে সংস্থাগুলি সর্বনিম্ন সাড়ে ন’হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার টাকা পর্যন্ত সাম্মানিক দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি নিয়োগকারী সংস্থা শিক্ষানবিশদের থাকার বন্দোবস্ত ও কাজের সময় খাবারও সরবরাহ করবে। এর পাশাপাশি, কয়েকটি সংস্থা ওই মেলায় আগত প্রার্থীদের মধ্যে থেকে যোগ্যদের শূন্যপদে নিয়োগও করবে বলে জানিয়েছে। বেলপাহাড়িতে সরকারি আইটিআই চালু হয়েছে ২০১৬ সালে। এখান থেকে গত সাত বছরে এ পর্যন্ত বিভিন্ন ট্রেডে ন’টি ব্যাচ উত্তীর্ণ হয়েছে। এই আইটিআইয়ে দু’বছরের কোর্সে ফিটার, ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক মোটর-ভেহিক্যাল, সার্ভেয়ার, অয়্যারম্যান ট্রেডে প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে।
এ ছাড়াও কোপা (কম্পিউটর অপারেশন অ্যান্ড প্রোগ্রামিং অ্যাসিস্ট্যান্ট), ওয়েল্ডার এবং সুইং টেকনোলজির মতো এক বছরের কোর্সও রয়েছে। ওয়েল্ডার, সুইং টেকনোলজি এবং অয়্যারম্যান এই তিনটি ট্রেডে ভর্তির ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ। বাকি ট্রেডগুলিতে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক উত্তীর্ণ। প্রতি বছর কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে র্যাঙ্ক অনুযায়ী ভর্তি নেওয়া হয়।
এ ছাড়া ২০ শতাংশ আসনে ম্যানেজমেন্ট কোটায় সরাসরি ভর্তি হওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন হয় না। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জানালেন, এর আগে ২০২০ সালে তাঁদের আইটিআই চত্বরে জব-ফেয়ার হয়েছে। সেখান থেকে ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে ৫৬ জন বিভিন্ন সংস্থায় চাকরি পেয়েছেন।
এ বার শিক্ষানবিশ মেলার অভিনবত্ব হল আইটিআইয়ের চূড়ান্ত বর্ষের পড়ুয়ারা শিক্ষানবিশ হিসেবে বিভিন্ন সংস্থায় হাতেকলমে কাজ শিখে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কথায়, ‘‘এ ধরনের সুযোগ পেয়ে জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকার আইটিআই পড়ুয়ারা উপকৃত হবেন।’’