মেদিনীপুর মেডিক্যালের এক সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট ওই এলাকাগুলি থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকটি এলাকাও নির্বাচন করা হতে পারে।
রাজ্য সরকারের সম্মতি মিলেছে। করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় জেলাবাসীর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে কি না, হলে কতটা, সে সব জানতে এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরেও অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু হচ্ছে। ক্লাস্টার হিসেবে আপাতত জেলার ৩০টি এলাকা চিহ্ণিত করা হয়েছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যালের এক সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট ওই এলাকাগুলি থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকটি এলাকাও নির্বাচন করা হতে পারে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) নির্দেশ মেনেই এই পদক্ষেপ। মেডিক্যালের ওই সূত্রে খবর, অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে একটি সমীক্ষা চালানো হবে। চিকিৎসার পরিভাষায় একে সেরেলোজিক্যাল সার্ভে বলা হয়। এই সমীক্ষারই অঙ্গ ওই অ্যান্টিবডি টেস্ট।
মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, ‘‘জেলায় অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু হচ্ছে।’’ মেদিনীপুর মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান পার্থসারথি শতপথী বলেন, ‘‘প্রোটোকল তৈরি করছি। ৩০টি ক্লাস্টার চিহ্ণিত করা হয়েছে। আমরা থার্টি ক্লাস্টার স্টাডি করব।’’ পার্থসারথি জানান, ‘খালি চোখে যাঁকে সুস্থ দেখাচ্ছে, তিনি সত্যিই সুস্থ, না কি সংক্রমিত, এই টেস্টের ফলে তা বোঝা যাবে। যদি দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তার মানে তিনিও সংক্রমিত। সংশ্লিষ্ট এলাকায় সংক্রমণ কোন স্তরে রয়েছে তা-ও বোঝা যাবে। বিভাগীয় প্রধানের সংযোজন, ‘‘যিনি পজিটিভ হয়েছিলেন, তাঁর অ্যান্টিবডি লেভেল কত, ওই লেভেল কতদিন থাকছে, তিনি কতদিন সংক্রমণকে রোধ করতে পারবেন, এ সবেরও আন্দাজ পাওয়া যাবে। লেভেল জিরো হয়ে যাওয়া মানে তিনি আবার সংক্রমিত হতে পারেন।’’ মেডিক্যালের এক সূত্রে খবর, এক- একটি ক্লাস্টার থেকে গড়ে ১৫- ২০ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। কার কার নমুনা সংগ্রহ করা হবে, সে সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়েই নেওয়া হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অ্যান্টিবডি হল শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সূচক। শরীরে যখন কোনও ক্ষতিকর বস্তু প্রবেশ করে, তা সে জীবাণু হোক বা বিষ, শরীর তখন সক্রিয় হয়ে ওঠে তাকে ধ্বংস করার জন্য। সে সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে রক্তে যে সমস্ত ‘যোদ্ধা’ তৈরি হয়, তারাই অ্যান্টিবডি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, খুব সহজে ও কম খরচে এই অ্যান্টিবডি টেস্ট করা যায়। এখান থেকে এমন সমস্ত তথ্য পাওয়া যায় যাতে অতিমারির সঙ্গে লড়াই করা সহজ হয়। যেমন সমাজের কতজনের মধ্যে রোগ ছড়িয়েছে, গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে কি না, মহামারির গতিপ্রকৃতি কেমন, যে পথে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হচ্ছে তা সফল না ব্যর্থ প্রভৃতি। অ্যান্টিবডি টেস্ট হওয়ার কথা এলাইজা পদ্ধতিতে।
জেলার এক আধিকারিক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘একবার অ্যান্টিবডি টেস্ট করলেই কোভিড হয়েছে, কি হয়নি তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। একাধিকবার পরীক্ষা করতে হয়। পজ়িিটিভ এলে রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করতে হবে আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে।’’