প্রচারে গোপাল ভাঁড়। নিজস্ব চিত্র
পর্দায় অমিতাভ বচ্চনের পরামর্শ শুনে গ্রামের মানুষ শৌচালয় ব্যবহার করা শুরু করেছিলেন। বাস্তবের মাটিতে বিগ বি’র স্থান নিয়েছে গোপাল ভাঁড়, ছোটা ভীমের মতো কার্টুন চরিত্রেরা। শৌচাগারের দেওয়ালে আঁকা এইসব চরিত্রদের পরামর্শ— ‘শৌচাগারে শৌচ করলে / রোগ জীবাণু যাবে চলে’। গড়বেতা ৩ অর্থাৎ চন্দ্রকোনা রোড ব্লকে গ্রামের ভিতর বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গেলে কার্টুন আঁকা এরকম সচেতনতামূলক ছবি চোখে পড়বে।
এই ব্লক আগেই ‘নির্মল ব্লক’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রতিটি পরিবারে শৌচাগার নির্মাণের দাবি করে ব্লক প্রশাসন। কিন্তু দাবির সঙ্গে বাস্তবের যে ফারাক রয়েছে তার প্রমাণ এই উদ্যোগই। দীর্ঘদিনের মাঠেঘাটে যাওয়ার অভ্যাস দূর করতে এর আগেও বিবিধ পথ নিয়েছিল ব্লক প্রশাসন। সচেতনতা সভা, মাইক প্রচার, জরিমানার নিদান, কন্যাশ্রীদের নামানো, গ্রামের মানুষকে নিয়ে নানা অনুষ্ঠান। কিন্তু এতকিছুর পরেও শৌচাগার ব্যবহারের প্রতি কিছু মানুষের অনীহা রয়েই গিয়েছে। এই প্রবণতা কমাতে গড়বেতা ৩ ব্লক প্রশাসনের হাতিয়ার গোপাল ভাঁড়, ছোটা ভীমের মতো কার্টুন চরিত্র।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এই ব্লক এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নবনির্মিত শৌচালয়ের দেওয়ালে কার্টুন চরিত্রগুলি এঁকে কেন্দ্রের শিশু-সহ গ্রামের মানুষদের সচেতন করার চেষ্টা হচ্ছে। বিডিও অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘আপাতত ৪৫ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নবনির্মিত শৌচাগারে বিভিন্ন কার্টুন, ছবি একে মানুষকে শৌচাগার ব্যবহারের প্রতি আকৃষ্ট করা হচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুরা সহ গ্রামের বাসিন্দারা এটা উপভোগও করছেন।’’ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক যুগ্ম বিডিও দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘শিশুদের কাছে শৌচালয়কে আকর্ষণীয় করে তুলতেই এই প্রচেষ্টা। যাতে শিশুরাও প্রথম থেকে বুঝতে পারে শৌচালয় ব্যবহার করা কত জরুরি।’’ ব্লকের শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক সন্দীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘যে সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শৌচালয় নেই, সেইসব কেন্দ্রে নতুনভাবে শৌচালয় তৈরি করে তার দেওয়ালে কার্টুন এঁকে শিশুদের বোঝানো হচ্ছে তার গুরুত্ব। এতে ভাল সাড়া মিলছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
হাতিখানা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শৌচালয়ে গোপাল ভাঁড়ের ছবি আঁকা হয়েছে। ছবিতে গোপালের মুখ দিয়ে বলা হয়েছে – ‘মাদুলি তাবিজ যতই বাঁধো / বলছি আমি গোপাল ভাঁড় /অর্ধেক রোগ এমনি যাবে /ব্যবহার করলে শৌচাগার’। এ ভাবেই আরেকটি কেন্দ্রের শৌচালয়ে শিশুদের প্রিয় ছোটা ভীম এঁকে বলা হচ্ছে—‘পড়ব না আর পেটের রোগে / যাব না আর হাসপাতালে’।