হুজুগে: হাতিকে তাড়া করছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। নয়াগ্রামে। নিজস্ব চিত্র
হাতিকে যাতে উত্যক্ত করা না হয় তার জন্য নানা ভাবে সচেতনতা প্রচার করছে বন দফতর। তবে তাতে যে আমজনতার একাংশ কান দিচ্ছেন না, শুক্রবার সেটা ফের দেখা গেল ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রামের খড়িকামাথানিতে।
এদিন সকালে একটি পূর্ণবয়স্ক রেসিডেন্সিয়াল হাতি ঢুকে পড়েছিল খড়িকামাথানির বাবুরাম পাথরা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় কঁইফুলিয়া গ্রামে একটি বাড়ির উঠোনে মজুত মহুল খায় সে। এরপরে এলাকাবাসীর তাড়া খেয়ে টলমল অবস্থায় গ্রামের পুকুরে স্নান করে সোনাঝুরি গাছের জঙ্গলে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। শুক্রবার সকালে বনকর্মী ও হুলাপার্টির সদস্যরা হাতিটিকে খেদিয়ে খড়িকার জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। হাতিটি কখনও বাঁশঝাড়ের আড়ালে, কখনও গৃহস্থের বাড়ির উঠোনে ঢুকে পড়েছিল। তবে কোনও ক্ষতি করেনি। এলাকাবাসীদের একাংশই হাতিটিকে উত্যক্ত করতে থাকেন। বিকাল সাড়ে ৩টা নাগাদ নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের উল্টোদিকের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে সে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন কেউ কেউ হাতিটির লেজও মুচড়ে দেন। তবে হাতিটি সে সবে ভ্রূক্ষেপ করেনি। বাবুরাম পাথরা গ্রাম ছেড়ে ধীর গতিতে কুঁকড়াশোল ও ভাতভাঙার মোরাম রাস্তা দিয়ে ৯ নম্বর রাজ্য সড়কে পিচ রাস্তায় উঠে বাস ও অন্য যানবাহনকে পাশ কাটিতে হাঁটতে থাকে। সেই রাস্তার পাশে ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ছবিও। হাতি দেখতে রাস্তার দু’পাশে ভিড় জমে যায়।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নয়াগ্রাম ব্লকে এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে দশটি রেসিডেন্সিয়াল হাতি রয়েছে। তারমধ্যেই একটি লোকালয়ে এসেছিল। এক বন আধিকারিকের দাবি, কয়েকশো লোকজনের হট্টগোলের জন্যই হাতিটিকে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যেতে সমস্যা হয়েছে। হাতিটি ক্ষিপ্ত হয়ে তেড়ে গেলে অঘটন ঘটার আশঙ্কা ছিল।
খড়্গপুরের ডিএফও অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গ্রামে হাতি ঢুকলে গ্রামবাসীরা বন দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। কিন্তু শুক্রবার যেভাবে হাতিটিকে তাড়ানোর নামে উত্ত্যক্ত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং আত্মহত্যার সামিল।’’ তিনি জানান, যেভাবে জনবহুল রাস্তায় হাতিটিকে খেদিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তাতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে পিছনে ঘুরলে অন্তত ১০-১২ জনের প্রাণহানি হতে পারত। গ্রামবাসীরা সচেতন না হলে এই ঘটনা ফের ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করেন তিনি।